বাংলার শেষ সীমানা দাঁতন। এই দাঁতনেই এককালে মোগল-পাঠানের যুদ্ধ হয়েছে। এককালে ইংরেজরাও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন এই এলাকায়। এখানে একদিকে যেমন রয়েছে বুদ্ধক্ষেত্র মোগলমারি, তেমনই একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। মোগলমারি থেকে অনতি দূরে রয়েছে জমিদার ক্ষেত্র।ইতিহাসবিদদের মতে, দাঁতনের উত্তর রায়বাড়ে ষোড়শ শতাব্দীতে গড়ে উঠেছিল মনোহরপুর রাজাদের আধিপত্য।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
১৫৭৫ সালে মোগল-পাঠান যুদ্ধে মোগল শাসক আকবরের সেনাদলে অংশ নিয়ে বীরত্ব দেখিয়েছিলেন সেনাপতি লছমিকান্ত উত্তর রাও। তাই তাঁকে ‘বীরবর’ উপাধি দিয়েছিলেন আকবর। তবে দাঁতনের সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী এলাকায় যুদ্ধ শেষে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে লক্ষ্মীকান্ত আর দেশে ফিরে যাননি। এখানেই বসতি গড়ে তোলেন। গড়ে ওঠে রাজবংশ। স্থাপিত হয় গড়বাড়ি।
পরে মনোহরপুরে উঠে আসেন তাঁরা। এখানেই গড়ে ওঠে রাজাদের অট্টালিকা। সেই বাড়িতে এখনও অবস্থান করেন উত্তরসূরিরা। বাড়ির কিছু কিছু অংশ ভগ্নপ্রায়। এখানে ছিল তিন তলা বিশিষ্ট নাট্যশালাও। যার দু’টি স্তম্ভ এখনও অক্ষত এবং তা রক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই সচেষ্ট হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। স্বাভাবিকভাবে এই ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে বাঁচাতে তৎপর হয়েছিলেন এলাকার বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান।
গত বছর আগস্ট মাসে হেরিটেজ ঘোষণার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। বুধবার বিকেলে, দাঁতনের মনোহরপুর রাজবাড়ি ও কাকরাজিত মন্দির পরিদর্শন করেছেন রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সদস্যরা। ছিলেন বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক বরুণ মণ্ডল সহ অন্যান্য আধিকারিকরাও।
প্রত্যন্ত গ্রামীন এলাকায় এই রাজবাড়ি হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেলে আগামীতে পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন দিগন্ত বিস্তৃত হবে শুধু তাই নয় এলাকায় আর্থসামাজিক উন্নতি হবে গ্রামের মানুষ এখানে নিজেদের ব্যবসা বাড়িয়ে তুলতে পারবে। স্বাভাবিকভাবেই আগামীতে হেরিটেজ ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন সকলে।
রঞ্জন চন্দ