যদিও এক্ষেত্রে রাজ্যের হলফনামায় দেখা যাচ্ছে রাজ্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে, তবুও সমবেত প্রচেষ্টার অভাব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে বলা হয় ১৫ বছরের বেশি পুরনো ব্যক্তিগত এবং বাণিজ্যিক গাড়ি (Old Car Cancelation) কলকাতা হাওড়া-সহ গোটা রাজ্যে যথেচ্ছ সংখ্যায় চলছে। এই সংখ্যাটা বেশ কয়েক লক্ষ হবে। কবে এর মধ্যে ১৫ বছরের পুরনো সমস্ত গাড়ি বাতিল করা হবে তার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া নেই (National Green Tribunal)।
advertisement
আরও পড়ুন : নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার 'চিরকুট' প্রসঙ্গ! যা দাবি করলেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক
কলকাতা এবং হাওড়ার বায়ু দূষণ নিয়েও এদিন নির্দেশ দিয়েছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ CSIR-NEERI -কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন কলকাতা এবং হাওড়ার দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি খতিয়ে দেখে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করার জন্য। তাদের দেওয়া রিপোর্টের পরামর্শ চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং সেগুলিকে অবিলম্বে বাস্তবায়িত করতে হবে। তিন মাসের মধ্যে এই রিপোর্ট অনুযায়ী সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও এদিন জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি শব্দ দূষণ নিয়েও এদিন কড়া নির্দেশ দেয় গ্রিন ট্রাইবুনাল (National Green Tribunal)। বলা হয়েছে পুলিশের সঙ্গে পরামর্শ করে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নির্দিষ্ট সময় অন্তর নজরদারি চালাতে পারে। এজন্য তারা পর্যাপ্ত সংখ্যক নজরদারি কেন্দ্র এবং যন্ত্রপাতি কিনতে পারেন। তিন মাসের মধ্যে রাজ্য পুলিশকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাউন্ড লিমিটার সংগ্রহ করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে ঘোষণার জন্য ব্যবহৃত শব্দযন্ত্রে এগুলিকে ব্যবহার করা যায়। প্রতিটি থানা অঞ্চলে টাস্ক ফোর্স গঠন করতে হবে যারা শব্দ দূষণের বিষয়টি নজরে রাখবেন এবং একজন নোডাল অফিসারকেও নিযুক্ত করতে হবে। নির্দেশে আরও বলা হয় একজন ট্রাফিক পুলিশকেও নজরে রাখতে হবে যাতে মোটরসাইকেল বা যানবাহনের ক্ষেত্রেও শব্দবিধি মানা হয়।
আরও পড়ুন : গ্রেফতারির পরে তিনবার মমতাকে 'ডায়াল' পার্থর, চতুর্থ কলেই 'ব্লকড' : সূত্র
রাজ্য পরিবহণ দফতর (West Bengal Transport Department) সূত্রে খবর এই প্রক্রিয়ায় কলকাতা ও হাওড়া পরিবহণ দফতরের আওতায় বাতিল হতে চলেছে লক্ষাধিক গাড়ি। তিন দফায় চলবে পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিল। প্রথম দফায় বাতিল হবে ১ লা জানুয়ারি ১৯৭০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ অবধি গাড়ি। দ্বিতীয় দফায় বাতিল হবে ১ লা জানুয়ারি ২০০০ সাল থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ সাল অবধি গাড়ি। তৃতীয় দফায় ১ লা জানুয়ারি ২০০৮ সাল থেকে ১৫ বছর ধরে চলা গাড়ি বাতিল হবে। বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের জন্য গাড়ির মালিকদের পাঠানো হচ্ছে চিঠি। প্রথম দফায় বাতিল হওয়া গাড়ির সংখ্যা দাঁড়াবে ৮৪ হাজার।
উল্লেখ্য রাজ্যজুড়ে দূষিত বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই শুরু হচ্ছে এই কাজ৷ ১৫ বা তার বেশি পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের জন্যে চিঠি পাঠানোর কাজ শুরু করল রাজ্য পরিবহণ দফতর। গাড়ির মালিকদের কাছে পাঠানো হচ্ছে চিঠি৷ বাতিল করতে হবে গাড়ি। একই সাথে সেই বাতিল হওয়া গাড়ি পুরোপুরি কাটাই করতে হবে৷ তার পরে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের অফিস থেকে মিলবে ছাড়পত্র৷ ইতিমধ্যেই পোস্ট অফিসের সহায়তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল বাড়ি বাড়ি গাড়ি বাতিলের চিঠি পাঠানোর কাজ।
আপাতত স্থির হয়েছে চিঠি হাতে পাওয়ার পরেই গাড়ির মালিককে পরিবহণ দফতরের শুনানিতে অংশ নিতে বলা হবে৷ সেই শুনানিতে গাড়ির মালিককে জানাতে হবে, তারা আর পুরনো গাড়ি রাস্তায় নামাবেন না। এর পরেই রাজ্য সরকার এই গাড়িগুলিকে ব্ল্যাক লিস্টেড করবেন। মালিকরা গাড়ি স্ক্র্যাপ করবেন। সেই স্ক্র্যাপ করার কাগজ পরিবহণ দফতরের কাছে জমা দেবেন। ন্যাশনাল ইনফরমেটিক সেন্টারের সহায়তা নিয়ে ঠিকানা জোগাড় করে সরস্বতী প্রেসে চিঠি ছাপানো হয়েছে। সেই চিঠি ডাক বিভাগ ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছে। আপাতত লাখ দেড়েক গাড়ি এভাবেই বাতিল করা হবে।