যখন যে দায়িত্ব পেয়েছেন, নির্দ্বিধায় সাফল্যের মুখ দেখেছেন বিশ্বরূপ দে। শুধু ক্রিকেট নয়, ফুটবল, দাবা, টেবিল টেনিস যে কোনও খেলায় দক্ষ প্রশাসকের ভূমিকা পালন করেছেন বিশ্বরূপ। জগমোহন ডালমিয়াকে সমস্ত অভিযোগ থেকে দায়মুক্ত করে ফের বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদে বসানোর লড়াইয়ে অন্যতম নায়ক ছিলেন বিশ্বরূপ।
আরও পড়ুন: বিজেপি-কে হারাতে যোগ্যতম মুখ মমতাই, রাখঢাক নয়, স্পষ্ট ঘোষণা তৃণমূলের
advertisement
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের হেভিওয়েট প্রশাসক হিসেবে পরিচিত এন শ্রীনিবাসনের খুব কাছের মানুষ বিশ্বরূপ। ময়দানে প্রচলিত রয়েছে একটা কথা, ক্রাইসিস ম্যান বিশ্বরূপ। সব সমস্যার সমাধান রয়েছে তাঁর কাছে। ব্যর্থতা বলতে শুধু সিএবি সভাপতির চেয়ারে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বসার সময় বিরোধিতা করে কোনও সাফল্য পাননি। তারপরই বোর্ডের সংবিধান সংস্কারের নিয়মের জাঁতাকলে পড়ে ক্রিকেট প্রশাসন থেকে বাদ পড়েছেন।
ক্রিকেট প্রশাসকের ভূমিকা থেকে সরে যাওয়ার পর বিশ্বরূপ নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেট কর্তা। বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেস পরিবারের ছেলে বিশ্বরূপ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় হাত ধরে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। বিশ্বরূপের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, সেই সময় নাকি বালি বিধানসভায় প্রাথমিকভাবে বিশ্বরূপের নাম তৃণমূলের তরফে ভাবা হলেও নিজেই জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে বৈশালীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে রাজি হননি তিনি।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দিতে শিবির কমিশনের, করোনা পরিস্থিতিতে কড়া নজর
তবে এবার কলকাতা পুরসভার ভোটে টিকিট পেয়েছেন বিশ্বরূপ। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বরূপ বলছেন, "ক্রিকেট প্রশাসন চালানো অনেক কঠিন। রাজনীতির ময়দান তুলনামূলক ভাবে অনেক সহজ। ভারতীয় বোর্ডের দায়ভার কিংবা টিম ইন্ডিয়া দায়িত্ব যখন সামলাতে পেরেছি যখন, তখন রাজনীতির ময়দানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা মানুষের জন্য করেছেন, ভোটে জেতার জন্য তা যথেষ্ট ।"
তৃণমূলের তরফ থেকে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরই জোর কদমে প্রচার শুরু করেছেন বিশ্বরূপ। নিজের হাতে দেওয়াল লিখেছেন। ওয়ার্ডের প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। প্রচারের ফাঁকেই বিশ্বরূপ বলছেন, "রাজনীতিতে আসলেও খেলাধুলো থেকে সন্ন্যাস নিচ্ছি না। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে খেলাধুলার প্রসার ঘটাতে চাই। একটা অডিটোরিয়াম করার স্বপ্ন রয়েছে।"
সব সময় চমক দেওয়া বিশ্বরূপ প্রচারেও কি কোনও চমক দেবেন? মুচকি হেসে বিশ্বরূপের জবাব, "বিশ্বরূপ যেখানে চমক সেখানে। প্রাক্তন কোনও ক্রিকেটার আসতেই পারেন প্রচারে।" মজা করে তাঁর উত্তর, "রবি শাস্ত্রী আসলে কেমন হয়?"
প্রার্থী হিসেবে বিশ্বরূপের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সিএবি-র বিভিন্ন কর্তারা ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সৌরভ বিরোধী হিসেবে পরিচিত বিশ্বরূপ বোর্ড প্রেসিডেন্টের থেকে কোনও শুভেচ্ছা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তৃণমূল প্রার্থীর অকপট জবাব, "সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা পেতে কার না ভালো লাগে। মানুষের জন্য কাজ করতে সৌরভ থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেককেই পাশে চাই।" ক্রীড়া প্রশাসক হিসেবে প্রায় একশো শতাংশ সাফল্য পাওয়া বিশ্বরূপ নিশ্চিত, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মানুষের রায়দানে প্রথমবার ছোট লাল বাড়িতে পৌঁছবেন তিনি।