উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা চাকরির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে। যদিও হাইকোর্টে দেওয়া হলফনামায় একাধিক তত্ত্ব থাকবে বলেই এসএসসি তরফে জানানো হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। তাই আপাতত হাইকোর্টের হলফ নেওয়ার দিকেই তাকিয়ে এসএসসি উচ্চপ্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা।
স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রের খবর এই হলফনামায় একদিকে যেমন উচ্চ প্রাথমিকের টেটের ওএমআর শিট যাচাই পর্বতে কী কী অসঙ্গতি ধরা পড়েছে তা যেমন হলফনামা আকারে জানাতে চলেছে এসএসসি, তারই সঙ্গে জানানো হবে এর জেরে মেধা তালিকায় কী পরিবর্তন হতে চলেছে। কমিশনের আধিকারিকরা মনে করছেন এর ফলে আরও কিছু চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে নেওয়া হয়েছে।
advertisement
এসএসসির কাছে গোটা রিপোর্টও চলে এসেছে। তাই আগামী সপ্তাহে হলফনামা দিয়ে জানানোর পর হাইকোর্ট কী নির্দেশ দেয় সেই দিকেই তাকিয়ে থাকবে আপাতত স্কুল সার্ভিস কমিশন। অন্যদিকে এই উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের জন্য এসএসসি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করেছিল।সেই তদন্তেও উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।T
আরও পড়ুন : বায়ুসেনার বিমানে ১২ টি চিতা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পৌঁছল মধ্যপ্রদেশে
উচ্চপ্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল পেশ করার আগে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফের নিয়োগ নিয়ে জটিলতা বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের জেরে স্কুল সার্ভিস কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের প্যানেল পেশ করার আগে এসএসসি তরফে নেওয়া টেটের ওএমআর শিট যাচাই করা হবে। এখনও পর্যন্ত এসএসসি তরফে দুটি টেট নেওয়া হয়েছে। ২০১১-১২ এবং ২০১৫ সাল এই দুবার টেট নেওয়া হয়েছে এসএসসি-র তরফে। আর সেই যাচাই পর্বতেই একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। কমিশন সূত্রে খবর ২০১৫ তে নেওয়া এসএসসি টেটে ওএমআর শিটে নম্বর নিয়ে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
ইতিমধ্যেই যেসব চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে, সেই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্য থেকেই একাধিক চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিটের নম্বরেই ধরা পড়েছে এই অসঙ্গতি। প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া শেষ হয়েছে সেই সব চাকরি প্রার্থীদেরই টেটের ওএমআর শিট যাচাই পর্ব শুরু করে কমিশন। সেই যাচাই পর্বের কাজ শেষ হওয়ার পরেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে এসএসসি-র কাছে। ২০১৫ নেওয়া টেটের যাচাই পর্বের কাজ শেষ হলেও ২০১১-এর টেটের যাচাই পর্বের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
আরও পড়ুন : স্মৃতি ইরানির মেয়ের বিয়ের রিসেপশনে অতিথি শাহরুখ, একতা, জিতেন্দ্র, রইল চাঁদের হাটের বর্ণময় ছবি
এসএসসি-র আধিকারিকদের দাবি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁদের মধ্য থেকে ২০১৫ টেট দেওয়া প্রার্থীরা যেমন রয়েছেন তেমনি রয়েছেন ২০১১-১২ তে দেওয়া টেট প্রার্থীরাও। তাই দুটি টেটের ওএমআর শিট যাচাই করা হচ্ছে এসএসসি-র তরফে। আর এই যাচাই পর্বে অসঙ্গতি উঠে আসায় উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে ফের জটিলতা তৈরি হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কমিশন সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই ইন্টারভিউ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের মধ্য থেকে যেসব চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে, গোটা তথ্যই হাইকোর্টে হলফনামা আকারে জমা দিতে চলেছে কমিশন। যদিও ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি ধরা পড়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আগেই সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছিলেন "আমাদের তরফে ওএমআর শিটের যাচাই পর্বের কাজ চলছিল বলেই উচ্চপ্রাথমিকের প্যানেল হাইকোর্টে পেশ করতে সময় লাগছিল। সেই যাচাই পর্ব ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে প্রায়। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি আমরা হাইকোর্টে হলফনামা আকারে জমা দেব। হলফনামাতেই আমরা যা জানানোর জানাব।"
গত ৮ বছর ধরে চলছে এসএসসি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া। ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্য পদ রয়েছে এই নিয়োগের জন্য। তবে এসএসসির যাচাই পর্বে ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি তথ্য উঠে আসায় এই নিয়োগে নতুন করে কোন জটিলতা তৈরি হবে না তো? এমনটাই এবার আশঙ্কা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের।
