নয়াদিল্লি: সোনালি বিবি, বাংলাদেশি সন্দেহে যাকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁর হেভিয়াস করপাস মামলা কলকাতা হাইকোর্টকে শুনে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত। একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টকে সোনালি বিবি এবং তাঁর পরিজনদের নাগরিকরত্ব সুনিশ্চিত করারও এক্তিয়ার দিল সর্বোচ্চ আদালত।
advertisement
কেন্দ্রকে নোটিস করা হল, অনুপ্রবেশকারীদের দেশের বাইরে পাঠানোর জন্য কী স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর ফলো করা হয় তা জানানোর জন্য। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক বোর্ডের তরফে করা মামলার শুনানি ছিল সর্বোচ্চ আদালতে। বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি পাঞ্চোলির বেঞ্চে মামলার শুনানি হয় এদিন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ, মায়ানমার থেকে লোক ঢুকেছে…এবার ৩ লক্ষ ভোটারের কাছে গেল SIR নোটিস
কেন্দ্রকে নোটিস করা হল, অনুপ্রবেশকারীদের দেশের বাইরে পাঠানোর জন্য কী স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর ফলো করা হয় তা জানানোর জন্য। মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ সেপ্টেম্বর৷
পরিযায়ী শ্রমিক বোর্ডের তরফে মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি এদিন বলেন, ‘‘কীভাবে কোনও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যক্তি অনুপ্রবেশকারী প্রমাণিত হওয়ার আগেই স্রেফ সন্দেহের বশে কাউকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দিতে পারে? বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে, তাঁদের সম্মতি আছে কিনা ফিরিয়ে নেওয়ার সেটা না জেনেই কীভাবে এটা করা হচ্ছে? একটি নির্দিষ্ট ভাষায় কথা বললে তাঁদের বাংলাদেশি বলে দেওয়া হচ্ছে? যাঁরাই বাংলা বলছেন তাঁদের বাংলাদেশি ভাষায় কথা বলছেন বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জবাব জানার আগেই তাঁদের ডুটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হাজারের সংখ্যায় ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ গুজরাতেও একই ঘটনা হচ্ছে। আমরা গুজরাতকেও এই মামলায় যুক্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি৷’’
পাল্টা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘কোনও সংস্থা কেন আসছে? কেন ব্যক্তিরা আসছেন না? কিছু সংস্থাকে কিছু রাজ্যের তরফে ব্যাকআপ দেওয়া হচ্ছে। সিস্টেমেটিক ইনফিলট্রেশন হচ্ছে। ডেমোগ্রাফি বদলে যাচ্ছে। এজেন্টরা সাহায্য করছে অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকতে। তাঁদের নথিও বানিয়ে দিচ্ছে। এটা দেশের জাতীয় স্বার্থের বিষয়। এই মামলাকে রোহিঙ্গা মামলার সঙ্গে শোনা হোক৷’’
শুনানি শেষে আদালতের পর্যবেক্ষণ, হাইকোর্ট হেভিয়াস করপাস আটকে রাখতে পারে না। আমরা কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইছি, সত্যিই কি এরকম হচ্ছে যে ভাষার কারণে কোনও ব্যক্তিকে বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে? অনেক অনুপ্রেবেশের ঘটনা ঘটছে, কোনও অনুপ্রবেশকারীকে দেশে পাঠানোর এসওপি কী? আমাদের জানাতে পারেন? বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি—- আমরা অস্বীকার করছি না যা এই বিষয়ের সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িত। কিন্তু পঞ্জাব এবং বাংলা একটি লেগাসি ইনহেরিট করেছে। আপনারা আমাদের কি জানাতে পারেন, ভাষার জন্য এরকম কিছু হচ্ছে কি না? বিচারপতি সূর্যকান্ত— আমরা সকলেই আমেরিকা থেকে কীভাবে ডিপোর্টেশন করা হচ্ছে। আপনারা কি আমেরিকার মতো ডিপোর্টেশন করতে চান? খুবই জটিল ইস্যু। সিরিয়াস ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন— বলে উল্লেখ অনুপ্রবেশের বিষয়কে।’’