চায়ের দোকানদার সুব্রত খাঁড়া বারবার বলছিল, ‘'আমার দোকানের ঠিক বিপরীতে রাস্তার ওপর, প্রায়ই বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় সুব্রত বাবু গাড়ি দাঁড় করাতেন। গাড়ি থেকে ওনার সিকিউরিটি নেমে এসে আমার কাছ থেকে চা নিয়ে যেতেন।সেই সময় চা দিতে গিয়ে প্রতিদিন আমার হাত-পা কাঁপত।যদি কিছু বলেন! যদি কোন সময় আমি দোকান না খুলতাম তাহলে ওঁর নিরাপত্তারক্ষী থেকে আরম্ভ করে বাড়ির কাজের লোকদের জিজ্ঞাসা করতেন,আমি দোকান খুলিনি কেন? উনি যে আমার কথা জিজ্ঞাসা করতেন,তাতেই আমার গর্বে বুক ভরে যেত।'’
advertisement
এই বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন। ওই চায়ের দোকানে বসে ছিলেন প্রদীপ সাহা নামে এক ভদ্রলোক।তিনি বালিগঞ্জ পোস্ট অফিসের পিওন। তিনি প্রতিদিন সুব্রত মুখোপাধ্যায় বাড়িতে আসতেন। তিনি বললেন '‘প্রতিদিনই একটা না একটা চিঠি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নামে আসত। বুধবার সুব্রত মুখোপাধ্যায় মৃত্যু হয়েছে। আজ সকালবেলা চিঠি বাছতে গিয়ে দেখলাম, সুব্রত বাবুর নামে একটাও চিঠি নেই। ওই বিল্ডিংয়ে আরও অনেকের নামে চিঠি রয়েছে আজ।'’
আরও পড়ুন- T20 WC: বায়োবাবলের মধ্যে থেকেই Diwali সেলিব্রেট করলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা, Photos
প্রদীপবাবু বলছিলেন,শেষদিনেও যদি একটি চিঠি ওঁর বাড়িতে নিয়ে আসতে পারতেন,তাহলে ওঁর জীবনে এই দিনটি নাকি স্মরণীয় হয়ে থাকত। এ যেন কাকতালীয় ব্যাপার। তিনি নেই বলে তার চিঠি আশাও বন্ধ হয়ে গেল।সুব্রত খাঁড়া যেরকম বলছিলেন, ‘‘আমার একজন দামি খরিদ্দার চলে গেল।'’ আসলে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শেষবারের জন্য দেখার ইচ্ছে নিয়ে অগণিত মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল। তার মধ্যেও চা ওয়ালা বারেবারে খুঁজে বেড়াচ্ছিল পুরানো সেই খরিদ্দারের হালকা হাসি এবং ধন্যবাদ জানানোর মুখটাকে।
SHANKU SANTRA