প্রসঙ্গত, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শনিবারই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালকে সন্দেশখালি যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। যদিও সেই সময় তিনি কলকাতা ছিলেন না। রাজ্যপাল সন্দেশখালি না গেলে ধরনায় বসার কথাও শোনা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতার মুখে। তাই বিরোধী দলনেতার দাবির পরে রাজ্যপালের সন্দেশখালি সফল নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত, গ্রামবাসীরা যে অঞ্চলগুলিতে বিক্ষোভ করেছেন সেই অঞ্চলগুলিতেই যাওয়ার কথা রাজ্যপালের। কী কারণে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ? সেই সম্পর্কে জানতে গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলবেন রাজ্যপাল। শুধু তাই নয়, সন্দেশখালি মেজিয়াখালিতেও যাবেন রাজ্যপাল। যেখানে গ্রামবাসীরা তৃণমূল নেতার পোল্ট্রি ফার্মে আগুন জ্বালিয়েছিল, সেই অঞ্চল ও পরিদর্শন করার কথা রাজ্যপালের।
advertisement
ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে দল থেকে ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে। তবে আরও এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেও গ্রামবাসীরা সরব হয়েছিলেন। তিনি এখনও অধরা৷
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে সেন্ট্রাল ফোর্স মোতায়েনের দাবি তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা। এদিন রাজভবনে তরফে যে বিবৃতি জারি করা হয়, সেখানে দাবি করা হয় রাজ্যপাল সিআরপিএফের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে কী কারণে বৈঠক করেছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি রাজভবনের তরফে। যা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। এর পাশাপাশি চিফ ভিজিলেন্স কমিশনারের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন রাজ্যপাল।
রাজভবনের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে এই বৈঠকের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। যা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা রাজনীতির মহলে। প্রসঙ্গত, ইডি-র আধিকারিকদের উপরে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশকে। শুধু তাই নয়, রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন। শেখ শাহজাহান নিয়েও কড়া মন্তব্য শোনা গিয়েছিল রাজ্যপালের মুখে। আর তাই রাজ্যপালের সন্দেশখালি যাওয়া নিয়ে ও রাজনৈতিক মহলেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: এবার বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্য সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ! স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনল তৃণমূল
ইডি-র আধিকারিকদের উপর মারধরের ঘটনার পর রাজ্যপাল কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। তারপর ফের দফায় দফায় সন্দেশখালিতে গ্রামবাসীরা তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলে সরব হওয়ায় নতুন করে উত্তপ্ত হয় সন্দেশখালি। আর এবার সেই সন্দেশখালিতেই সোমবার সকালেই যাচ্ছেন রাজ্যপাল। সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাসন্তী হয়ে ধামাখালি পৌঁছবেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে নদীপথে সন্দেশখালি যাবেন রাজ্যপাল। তারপর ওইদিনই বিকেলে সন্দেশখালি থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।
সূত্রের খবর, পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদেরও ডেকেছেন রাজ্যপাল সন্দেশখালিতেই। এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইবেন রাজ্যপাল সন্দেশখালিতেই। যদিও ইতিমধ্যেই নবান্নের থেকেও রিপোর্ট চেয়েছেন রাজ্যপাল। সবমিলিয়ে সোমবার দিনভর নজরে থাকবে রাজ্যপালের সন্দেশখালির সফর।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়