প্রধান শিক্ষকের খাদের কিনারে পৌঁছানোর গল্প হার মানাবে অনেক সিনেমার চিত্রনাট্যকে। সিঙ্গুর মহামায়া হাইস্কুলেরই প্রাক্তনী আশিসকুমার সিনহা। তিনিই ২০১৪ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেলেন স্কুলে। তাঁর সময়েই স্কুল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে তাক লাগানো ফল করেছে জেলায়। রাজ্যে। ২০২০ জুন মাসে বেশ কিছু স্কুলের অনিয়ম নিয়ে সরব হন তিনি। কিছু শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর সময়ে স্কুলে না আসা, শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে শিথিলতা- সব কিছু নিয়ে প্রতিবাদ করেন।স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি দেখার আবেদন করেও কাজ হয়নি। প্রসঙ্গত স্কুল কতৃপক্ষের সভাপতি তখন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সিঙ্গুরের বিধায়ক ছিলেন তিনি। স্কুলের অনিয়মের প্রতিবাদ করেও কোনও ফল না মেলায় ১৩ অগাস্ট ২০২০ প্রধান শিক্ষক পদে পদত্যাগত্র পাঠান স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। পদত্যাগ প্রত্যাহারের অনুরোধ করে স্কুল। ৫ অক্টোবর ২০২০ তে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তাব পাঠায় বোর্ডে। ১৫ অক্টোবর ২০২০ প্রধান শিক্ষক পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করতে চেয়ে আবেদন করেন স্কুল ও ডিআই কাছে। ১৭ অগস্ট ২০২১ বোর্ড পদত্যাগ গ্রহণ করে।
advertisement
আরও পড়ুন: পুরভোটের দিন ফের ঝেঁপে বৃষ্টি! কোন কোন জেলা ভাসবে প্রবল বর্ষণে? রইল Latest Updates...
এরপর মামলা হয় হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। প্রথমে একক বেঞ্চে হেরে যান প্রধান শিক্ষক। বোর্ডের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয় একক বেঞ্চ। আইনি লড়াই পৌঁছয় ডিভিশন বেঞ্চে। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, প্রধান শিক্ষকের দেওয়া পদত্যাগপত্র তাঁর স্বেচ্ছাকৃত সিদ্ধান্ত নয়। তিনি পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের আবেদন স্কুল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি, জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছেও পাঠান। তাহলে কীসের ভিত্তিতে বোর্ড প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য না শুনেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নিল? আশিসবাবুর আইনজীবী অমিতাব্রত রায় জানান, "১৫ দিনের মধ্যে আমার মক্কেলকে প্রধান শিক্ষক পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।" পুনর্বহাল পাওয়া প্রধান শিক্ষক আশিসকুমার সিনহা (Ashis Kumar Sinha) জানালেন, "স্কুলের পড়াশোনার মান ভাল, এই মান আরও বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করব।"