এ দিকে, দেবাঞ্জনকে জেরা করে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার দাবি, ‘বাগরি মার্কেট থেকে ভ্যাকসিন কিনেছিল সে। ৫-৬ দিন ধরে টিকাকরণ কর্মসূচি চলছিল। একটি NGO-র সঙ্গে টিকাকরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল।' জেরায় দেবাঞ্জন আরও জানিয়েছে, ‘৪-৫ মাস আগে এলাকাতেই একটি অফিস ভাড়া নেয় সে। ১০-১২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল টিকা দেওয়ার জন্য। সেই সব কর্মীরা বেতন পেতেন।' তবে দেবাঞ্জনের সঙ্গে এই ঘটনায় আরও কে বা কারা যুক্ত তা এখনও নাগালে পায়নি পুলিশ। অভিযুক্তকে জেরা করে সে কোথা থেকে ভ্যাকসিন কিনেছিল, তার সঙ্গে আরও কোনও বড় মাথা জড়িয়ে রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
advertisement
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ২২ জুন কসবা নিউমার্কেট (Kasba New Market COVID19 vaccination camp) এর কাছে একটি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প-র আয়োজন করা হয়। বিশেষ ভাবে সক্ষম বাচ্চাদের ও সমকামীদের বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সাংসদ অভিনেতা মিমি চক্রবর্তী (MP Actress Mimi Chakraborty)। তিনিও টিকা নেন এই ক্যাম্পে। কিন্তু পরে জানা যায় এই ক্যাম্প-র আয়োজক, দেবাঞ্জন দেব, যিনি নিজেকে আইএএস অফিসার বলে পরিচয় দিতেন, তিনি আদতে কোনও সরকারি আধিকারিকই নন।
মিমি জানালেন, 'আমার কাছে নিমন্ত্রণ আসে, 'পৌরসভার জয়েন্ট কমিশনারের উদ্যোগে সমকামী ও বিশেষভাবে সক্ষম বাচ্চাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে, আপনি যদি আসেন।' আমার মনে হয় আমার যাওয়াতে যদি লোকজন উদ্বুদ্ধ হন, কেন নয়। আমি বলি নিশ্চয়ই যাব। গোটা বিষয়টা প্রচারও করি।' মিমি আরও বলেন, 'আমি সময় মতো সেই ক্যাম্পে চলে যাই। আমি নিজেও সেখানে ভ্যাকসিন নিই, যাতে আমাকে দেখে লোকজন আরও সামনে আসেন টিকা নিতে।'
তবে টিকা নেওয়ার পরই খটকা লাগে মিমির৷ সাধারণত টিকা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফোনে ম্যাসেজ আসার কথা৷ কিন্তু মিমির কাছে কোনও ম্যাসেজ আসে না। তাঁর কথায়, 'টিকা নেওয়ার পর আমার ফোনে কোনও ম্যাসেজ আসেনি। আমি ভাবলাম কোনও কারণে হয়ত তা আসেনি, চলে আসবে নিশ্চয়ই। করোনা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেটের কথাও তিনি জিজ্ঞাসা করেন৷ কিন্তু তাঁকে বলা হয় যে তাঁর বাড়িতে সেই শংসাপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে৷ মিমি বলছেন, আমি জিজ্ঞেস করি আমার সার্টিফিকেটটা কোথায়? তখন আমাকে বলা হয়, ম্যাডাম আপনি বাড়ি পৌঁছতে, পৌঁছতে চলে আসবে। আমার বাড়ি কসবাতেই। বাড়ি যাওয়ার পরও সার্টিফিকেট না আসায়, আমি আমার টিমকে জিজ্ঞেস করি৷ তখন ওঁরা বলে, ভ্যাকসিন ক্যাম্প থেকে বলা হয়েছে, তিন চার দিনের মধ্যে সার্টিফিকেট আসবে।'
তখনই মিমি তৎপর হয়ে ওঠেন। খোঁজ নিতে শুরু করেন, সেই ক্যাম্পে যাঁরা টিকা নিয়েছেন সকলের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে কি না। তিনি জানালেন, 'ওখানে টিকা নেওয়ার পর কারোর-ই ম্যাসেজ আসেনি। আমি বুঝতে পারি বিষয়টা ভুল দিকে যাচ্ছে। আমি তক্ষুনি টিকা দেওয়া যাতে বন্ধ হয়, সেই ব্যবস্থা করি। পুলিশ, প্রশাসনের সাহায্যে ভুয়ো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করিয়ে দিই।'
