আরও পড়ুন: সকাল ১১ টা পর্যন্ত কলকাতা পুর নির্বাচনে ভোটদানের হার ১৮.৫১ শতাংশ
২৫ ও ৩১ ডিসেম্বর, ১ জানুয়ারি, বছর শেষের ছুটির সপ্তাহ এসে গিয়েছে নাগালের মধ্যে। তার আগেই রবিবারের ভোট পরবে চাকুরিজীবীদের বাইরেও অনেকেই ছুটি পেলেন। ছুটির মেজাজে দোকান ব্যবসায়ী থেকে নানা কাজে জড়িত অসংখ্য মানুষ। রবিবার হলেও কলকাতা শহর তো নিদ্রা যাওয়ার সুযোগ পায় না, অনন্ত চক্রের মতোই ঘুরতে থাকে কলকাতার যাত্রাপথ। ভোটের দিন যেন একটু জিরিয়ে নেওয়া। আর সেই সুযোগেই কলকাতার ভোজনবিলাস, মুর্গি-মটনে স্বাদবদল।
advertisement
আরও পড়ুন: মমতা-অভিষেকের বুথে চমকের নাম আশির বিজিত রায়চৌধুরী, ভোটের সকালে তিনিই 'প্রথম
উত্তর-থেকে দক্ষিণ, বেশিরভাগ এলাকায় ডিসেম্বর উনিশের সকাল থেকে লম্বা লাইন নজরে পড়ল মাংসের দোকানের সামনে। বেহালার বাসিন্দা ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় বললেন, "আমরা দিনটা কাটাব ছুটির মেজাজে। টিভি চলবে। কারণ আজ ভোট, খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন। তবে সমান গুরুত্বপূর্ণ মাংস খাওয়া। তাই মুরগির মাংস কিনতে এসেছি।"
এক গাল হেসে এগিয়ে গেলেন তিনি। চিকন গালের প্রশান্তি দেখে মনে হল, এ বুঝি পৃথিবীর সবচেয়ে কম বিরক্তির লাইন দেওয়া। সব লাইনেই তাড়া আছে, সব লাইনেই বিরক্তি আছে, কিন্তু ছুটির দিনে মাংস কেনার লাইনে সকলের মুখেই যেন হাসি। অপেক্ষায় বিরক্তি নেই, বরং ধীরে ধীরে লক্ষ্যে পৌঁছে যেন যুদ্ধ করাই লক্ষ্য।
একই কথা বললেন সরলা রায়। তিনি বললেন, "আমাদের এখানে পরিস্থিতি ভালই আছে। আমরা আজ ভোট পিকনিক করব।" ভোটের দিন সকাল ১১টা নাগাদ বেরিয়ে এসে সেই পেটপুরে খাওয়ার কথা বললেন ফিরহাদ হাকিমও। বললেন, "মানুষ বেশ লুচি-টুচি খেয়ে ভোট দিতে যেতে পারেন এই শীতকালে, যাচ্ছেনও। একটা খুশির আবহাওয়ায় ভোট হচ্ছে। আর আমার তো কোনও কাজ নেই আজ। সকালে পরোটা খেলাম, একটু খোঁজ নিলাম। ভোট মিটলে বিকেলে একটু আড্ডা দিতে যাব।"
কালে কালে ভোটের চেহারা অনেক পাল্টেছে। ব্যালটের বদলে এসেছে ইভিএম। প্রচারে প্রাধান্য পাচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যম। তবু ভোট পরবের দিনের উপাচার পাল্টায়নি বাঙালির। আঙুলে কালি লাগিয়ে ভোট কেন্দ্র ফেরত বাঙালির হাতে কষা মটনের চেনা গন্ধ এখনও আদি ও অকৃত্রিম। সেই ট্র্যাডিশন যেন সমানে চলেছে!