টালিগঞ্জ অটো ইউনিয়নের সহযোগিতায় এই আলোচনা সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল, অটো চালকদের সামনে ইলেকট্রিক গাড়ির সুযোগ সুবিধাগুলো তুলে ধরা। ইভি ব্যবহারে যে সব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার সমাধানও খোঁজা হয় বৈঠকে।
advertisement
এদিনের আলোচনায় কলকাতার অটো চালক, ই-অটো বিক্রেতা, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ছাড়াও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন টালিগঞ্জ অটো ইউনিয়নের সচিব রবীন বিজলি, পরিবহণ বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব গোপাল, সিদ্ধার্থ শ্রীনিবাস, অচ্যুথান প্রমুখ। আলোচনায় মোটামুটি সবাই একমত হন যে যানবাহনের কারণেই কলকাতায় বায়ুদূষণ বাড়ছে। পেট্রোল, এলপিজি ও সিএনজি চালিত অটোর পরিবর্তে ইলেকট্রিক গাড়ির দিকে এগোনো এখন সময়ের দাবি। ই-অটো চালু করতে কী কী সুযোগ-সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ইন্ডিয়া ক্লিন এয়ার নেটওয়ার্কের কো-চেয়ারপার্সন এবং স্যুইচঅন ফাউন্ডেশনের এক জিকিউটিভ কনসালট্যান্ট অজয় মিত্তল (Ajay Mittal, Executive Consultant of SwitchON Foundation and Co-Chairperson of India Clean Air Network) সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “অটো চালকদের ই-অটো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া জরুরি। তাঁদের সমস্যা বুঝে সেই মতো সমাধান করতে হবে। তবেই ইলেকট্রিক গাড়িতে রূপান্তর সহজ হবে।”
একটি সুপরিচিত অটো সংস্থার ইভি বিভাগের প্রধান বলেন, “আমাদের সংস্থার নতুন ই-অটো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি। এতে ৯ কিলোওয়াতের ব্যাটারি রয়েছে। ৫ বছরের ওয়্যারেন্টি পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন চলে।”
২০২০ সালে TERI-র গবেষণায় বলা হয়েছে, অটোর ধোঁয়াই কলকাতায় বায়ুদূষণের ১১ শতাংশের জন্য দায়ী। পরিবহণ দফতরের ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১২৫টি রেজিস্টার্ড অটো রুট রয়েছে। পারমিট দেওয়া হয়েছে ১১ হাজারের বেশি অটোকে।
২০১৫ সাল থেকে কলকাতা ‘নন-অ্যাটেইনমেন্ট এরিয়া। অর্থাৎ বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি। ইলেকট্রিক অটো চালু করা তাই সময়ের দাবি। তবে, সঠিক পরিকাঠামো, ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন, খরচ সবচেয়ে বড় বাধা। ধীরে ধীরে সেই বাধাও কাটছে। বর্তমানে কলকাতায় ৩,৫০০ ইলেকট্রিক গাড়ি চলছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৩,৫৫,০০০-এ পৌঁছতে পারে।
টালিগঞ্জ মেট্রো, গড়িয়া, রুবি, বালিগঞ্জ-সহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকার ৪৩৫ জন অটো চালকদের নিয়ে সমীক্ষা করে ইন্ডিয়া ক্লিন এয়ার নেটওয়ার্ক এবং স্যুইচঅন ফাউন্ডেশন। সেখানে উঠে এসেছে, মহানগরের ২৯ শতাংশ অটোচালক এখন ই-অটো চালাতে প্রস্তুত।
ই-অটো নিয়ে আশাবাদী টালিগঞ্জ অটো ইউনিয়নের সচিব রবীন বিজলিও। তিনি বলেন, “ইলেকট্রিক গাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি সত্যিই আশাবাদী। এই কর্মশালার মাধ্যমে সরকারি ভর্তুকি ও ই-অটো গ্রহণের নীতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন চালকরা। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এই পরিবর্তন শুধু অটো চালকদের দৈনন্দিন খরচ কমাবে তাই নয়, শহরের পরিবেশও পরিচ্ছন্ন থাকবে।”