সিআইএসএফ কর্মী পরিচয় দিয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে চেয়ে ওই ব্যবসায়ীর থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে বেলেঘাটা থানা ও পরে লালবাজার সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার সাইবার সেল।
সুভাষ সরোবর পার্কের বাসিন্দা শুভাশিস চট্টোপাধ্যায় খড়দহে নিজের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিতে চান, এই মর্মে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। এই বিজ্ঞাপন দেখে বিভিন্ন ব্যক্তি শুভাশিসবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তাঁর আরও দাবি, আহমেদাবাদ থেকে একজন সিআইএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে তাঁর কাছে ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে চান।
advertisement
আরও পড়ুন: ডাক্তার নেই! রোগী দেখে ওষুধ দিচ্ছেন ফার্মাসিস্ট! গড়িয়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাঞ্চল্যকর কাণ্ড
ফ্ল্যাট মালিক শুভাশিস চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ফ্ল্যাটের যাবতীয় তথ্য এবং ছবি চেয়ে পাঠান আমেদাবাদের ওই ব্যক্তি। শুভাশিসবাবু তাঁর নিজের ফ্ল্যাটের ছবি ও তথ্য পাঠিয়ে দেন। তাঁর আরও দাবি, ছবি দেখে পছন্দ হওয়ার পর ওই সিআইএসএফ কর্মী ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিতে চান।
শুভাশিস বাবুকে অগ্রিম বাবদ টাকা দেওয়ার জন্য সিআইএসএফের অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলান ওই ব্যক্তি৷ এমন কি, তাঁরা যে সিআইএসএফ কর্মী তার পরিচয় বাবদ নিজেদের আই কার্ডের পাঠান শুভাশিস বাবুকে৷ ভিডিও কলে কথা বলার সময় তাঁদেরই একজন আধা সামরিক বাহিনীর পোশাক পরেছিলেন বলে দাবি করেছেন শুভাশিস বাবু।
লেনদেনের বিষয়ে কথা শুরু হলে ইউপিআই- এর মাধ্যমে অগ্রিম টাকা দেওয়া হবে বলে শুভাশিস বাবুকে জানান ভাড়া নিতে চাওয়া ওই ব্যক্তি। ওই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি তাদের জানিয়ে ছিলেন, ইউপিআই -এর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের কোনও ব্যবস্থা নেই। এর পর জানতে চাওয়া হয়েছিল কোনও ওয়ালেট তিনি ব্যবহার করেন কিনা। শুভাশিস বাবু একটি ওয়ালেট ব্যবহার করার কথা জানিয়েছিলেন ভাড়া নিতে যাওয়া ওই সিআইএসএফ কর্মীকে।
আরও পড়ুন: বাড়ির সামনে বিপজ্জনক বিদ্যুৎ স্তম্ভ? এখনই জানান পুরসভাকে, রেখে দিন এই নম্বর
অভিযোগ, কানেক্ট করার নাম করে এক টাকার পেমেন্ট রিকোয়েস্ট গেটওয়ে পাঠানো হয় তাঁর কাছে। বলা হয়, এক টাকা পাঠালে কাছে দু' টাকা পাঠানো হবে। শুভাশিস বাবু তৎক্ষণাৎ এক টাকা পাঠিয়ে দেন ওই ওয়ালেটে, সঙ্গে সঙ্গে ফেরত পেয়ে যান ২ টাকা। এর পরই পাতা হয় প্রতারণার ফাঁদ।
কী ভাবে প্রতারণা? শুভাশিস বাবুর অভিযোগ, তাকে দশ হাজার টাকার একটি পেমেন্ট রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। বলা হয় এই দশ হাজার টাকা পাঠান আপনার কাছে কুড়ি হাজার টাকা রিফান্ড যাবে। কিন্তু শুভাশিস বাবু, সেই সময় এক হাজার টাকা ওনাদের পাঠিয়েছিলেন। তৎক্ষণাৎ সেই টাকা রিফান্ড না আসায় আবারও যোগাযোগ করেন আহমেদাবাদের ওই সিআইএসএফ কর্মী সঙ্গে। বেলেঘাটের ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ, তাকে বলা হয় এত কম অ্যামাউন্টের টাকা রিফান্ড হচ্ছে না আপনি দশ হাজার টাকা পাঠান। আপনাকে ১১ হাজার টাকা রিফান্ড করা হবে। কিন্তু রিফান্ড না আসায় আবার যোগাযোগ করেন তাদের সাথে।
এবার ১১ হাজার টাকার একটি পেমেন্ট রিকোয়েস্ট পাঠানো হয় শুভাশিস বাবুকে অভিযোগ এমনই। শুভাশিস বাবু, সেই পেমেন্ট করে ফেলেন। মোট ২২ হাজার টাকা পেমেন্ট করার পর শুভাশিস বাবুর মনে হয় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। যোগাযোগ করেন বেলেঘাটা থানায়। সেখানে লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে লালবাজারের সাইবার সেল তদন্ত শুরু করেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। একই ভাবে এর আগে শহরের বেশ কয়েকজন প্রতারণা শিকার হয়েছেন।
