বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দুই ব্যক্তির নাম শশধর মাহাত (৬০) ও আনন্দ জানা (৭৩)। তাঁদের দু’জনের বাড়ি বাছুরখোয়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: প্রয়াত বার্ট ইয়ং, অস্কার মনোনীত হওয়া প্রখ্যাত অভিনেতা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ৮৩-তে
বনদফতর ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে কলাইকুণ্ডার দিক থেকে ১৫টি হাতির একটি দল সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে নয়াগ্রাম ব্লকের রামেশ্বর মন্দির সংলগ্ন দেউলবার এলাকায় প্রবেশ করে। ওই দলে একটি শাবক হাতি ছিল। কিন্তু শাবকটি ডুবে যায় নদীতে। মা হাতিটি বহু চেষ্টা করে শাবকটিকে টেনে তুললেও সেটি মারা যায়। এরপর মা হাতিটি প্রথমে মৃত শাবকটিকে ছেড়ে যেতে চায়নি। উদভ্রান্তের মতো ছুটতে থাকে এদিক ওদিক। এদিকে হস্তি শাবকের মৃত্যুর খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তেই পাশাপাশি এলাকার মানুষজনেরা মৃত হস্তি শাবক দেখার জন্য ভিড় জমায়।
advertisement
বনদফতর বার বার সর্তক করলেও মানুষ সে কথা না শুনে ভিড় বাড়াতে থাকে। সেই সময় ক্ষিপ্ত মা হাতিটি আরও রেগে গিয়ে স্থানীয় মানুষজকে তাড়া করে। অন্যান্য মানুষজনেরা দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারলেও দুই বৃদ্ধ পড়ে যায় এবং পর পর ওই দুই ব্যক্তিকে শুঁড়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। পরে দুপুরনাগাদ হাতিটি পিচ রাস্তার উপরে উঠে আসে। সেই সময় একটি যাত্রীবাহী বাস নয়াগ্রামের দিক থেকে ঝাড়্গ্রামের দিকে আসছিল। বাসের চালক হাতিটিকে রাস্তার উপরে দেখে বাস থামিয়ে দেন। হাতিটিকে বাসের দিকে আসিতে দেখে বাসে থাকা যাত্রীরা নেমে পালিয়ে যায়। পরে হাতিটি বাসটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। বাসটিকে ফেলতে না পেরে পাশে থাকা একটি মোটর বাইককে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার পর জঙ্গলে চলে যায়।
এই ঘটনার পর বনদফতর ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে পাশাপাশি গ্রামের মানুষজনকে সচেতন করছেন। এই বিষয়ে খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, “একটি শাবক হাতির মৃত্যুর ঘটনার পরেই মা হাতি ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। মৃত শাবকটিকে ছাড়তে চাইছিল না। পরে চারিদিকে ছোটাছুটি শুরু করে। বারা বার সতর্ক করা হয়েছিল যাতে লোকজন সরে যায়। দুই বৃদ্ধ পালাতে পারেননি। মৃত পরিবার দু’টিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”
রাজু সিং