রাজ্যের স্কুল পড়ুয়াদের সুবিধার্থে সবুজ সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সাইকেল তুলে দেওয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে, সেখানে পরিবারের আর্থিক অবস্থা যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে সেই লক্ষ্যেই এই প্রকল্প। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের মাঠে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে কয়েক হাজার সবুজ সাথীর সাইকেল। দীর্ঘ সময় এইভাবে পড়ে থাকায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সাইকেলে মরচে ধরেছে। বেশিরভাগই আর চালানোর উপযোগী নেই। স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য আসা সাইকেল বিতরণ না করে এইভাবে ফেলে রাখায় নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাছাড়া এতে সরকারি কোষাগরের অর্থ জলে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ।
advertisement
জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে ঝামেলা চলছে। মূলত সেই কারণেই কি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সাইকেল বিতরণে এই বিলম্ব? তার ফলেই কি তবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে সাইকেলগুলো? বাহাদুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুচেতা কর মূলত এই অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, "বর্তমানে আবাস যোজনা নিয়ে ভীষণ ঝামেলা চলছে। মূলত সেই কারণেই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম স্বপ্নের প্রকল্প সবুজ সাথীর সাইকেল বিতরণ করতে দেরি হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: বীরভূমের হাটে বিক্রির আগে উদ্ধার হাতির দাঁত, বাজারমূল্য প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা
যদিও বাহাদুর পঞ্চায়েতের প্রধান আবার সম্পূর্ণ উল্টো দাবি করেছেন। তিনি বলেন, "এই সাইকেল বিতরণের মূল দায়িত্ব ব্লক অফিসের। তাদের মাধ্যমেই তালিকা আসবে স্কুলগুলিতে এবং অঞ্চল অফিসে। তবে এখনও পর্যন্ত তা এসে না পৌঁছনোর জন্যই এই দেরি হচ্ছে।" এদিকে এইভাবে সরকারি প্রকল্পের সাইকেল নষ্ট হওয়া নিয়ে অঞ্চলের বিরোধী দলনেতা তপন রায় বলেন, "দ্রুত এই সাইকেলগুলিকে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। যদি বিতরণের এই কাজ দ্রুত শুরু না করা হয় তাহলে দলগতভাবে বড়সড় আন্দোলনে নামব আমরা।" এই ঘটনায় অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের কেউ কেউ বলতে শুরু করেছে, "ভাল সাইকেল দিলে তবেই নেব। বৃষ্টিতে ভেজা খারাপ সাইকেল কোনমতেই বাড়ি নিয়ে আসব না।"
সুরজিৎ দে