লন্ডনে জেলেনেস্কির জন্য ছিল রেড কার্পেট। ইউরোপীয় দেশের নেতাদের সঙ্গে জেলেনেস্কির বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন স্টারমার। বিপুল অঙ্কের নতুন চুক্তিও হয়। স্টারমার এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তাঁরা ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত। শুধু তাই নয়, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউক্রেন মিলে একটি যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা তৈরি করছে বলেও জানিয়েছেন স্টারমার।
আরও পড়ুনAnindita-Sudip Baby: অনিন্দিতা-সুদীপের ঘরে এল ‘লক্ষ্মী’! হার্ট ইমোজি দিয়ে করলেন ছবি পোস্ট
advertisement
ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ আত্মবিশ্বাসী বার্তা দেন জেলেনেস্কি। “এই ক’দিনে আমরা ইউরোপের সুস্পষ্ট সমর্থন পেয়েছি। সবাই আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ। সহযোগিতার মানসিকতাও বেড়েছে। একটা বিষয়ে সবাই একমত, শান্তির জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রয়োজন।”
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করলে পরবর্তীকালে রাশিয়া ফের ইউক্রেনের উপর হামলা করতে পারে আশঙ্কা জেলেনেস্কির। পাশাপাশি আমেরিকার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কথায়, “আমরা জানি আমেরিকার ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের সাহায্যের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের স্বাধীনতা এবং স্থিতিশীলতা অনেকটাই সহযোগীদের উপর নির্ভরশীল। এটা তাঁদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্যও জরুরি।”
সম্প্রতি ওভাল অফিসে রীতিমতো বিবাদে জড়িয়ে পড়েন ট্রাম্প এবং জেলেনেস্কি। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন ঘটনা বিরল। জেলেনেস্কির মুখের উপর ট্রাম্প বলে দেন, “আপনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন।” তাঁর স্পষ্ট কথা, “আমেরিকা সামরিক সাহায্য না করলে দুই সপ্তাহও টিকতে পারত না ইউক্রেন।”
তবে এত কিছুর পরেও নিজের অবস্থানে অনড় জেলেনেস্কি। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমেরিকার সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। কোনও একটা বিশেষ মুহূর্তের নয়। তবে আমাদের আরও খোলামেলা এবং বাস্তববাদী হতে হবে।” সঙ্গে তিনি জানান, গঠনমূলক আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ করলে তিনি ফের আমেরিকায় যেতে প্রস্তুত।
এদিকে পুরো ইউরোপ জেলেনেস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে। সমর্থনের আশ্বাসও দিয়েছে। ইউরোপ ও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, রোমানিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ইলি বোলোজান, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
সম্মেলনের শুরুতেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, “আমরা সবাই ইউক্রেনের পাশে আছি। যতদিন প্রয়োজন থাকব। এটি ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য এক বিরল মুহূর্ত।” ন্যাটোর ভবিষ্যৎ এবং আমেরিকার সমর্থন অব্যাহত থাকবে কি না, তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয় এদিন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন জেলেনেস্কি।