গত কয়েক বছর ধরে, সন্ত্রাসবাদের কর্তাব্যক্তিদেক নিয়ে পাকিস্তান খুবই উদ্বিগ্ন। একদিকে, বেলুচিস্তানে, বিএলএ অর্থাৎ বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের বিদ্রোহীরা ক্রমাগত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি, পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের দেশে, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা জঙ্গিদের একে একে নিকেশ করে চলেছে। যে ব্যক্তি এদিন হাফিজ সঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে, তাকে কেউ দেখেনি এবং কেউ তাকে চিনতেও পারেনি। গোটা বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে ঘোরতর ধোঁয়াশা৷
advertisement
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, আক্রমণকারী দোকানে জিনিসপত্র কিনতে এসেছিল। সিসিটিভি ক্যামেরার ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দোকানে উপস্থিত আব্দুল রেহমানের কাছ থেকে জিনিসপত্র কিনতে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। তারপর তাকে গুলি করার পর সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হামলার পরেই হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আব্দুল রেহমানকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সম্প্রতি, অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা ফয়সল নাদিম ওরফে আবু কাতাল সিন্ধিকেও হত্যা করেছিল। দাবি করা হচ্ছে যে, এই আবু কাতাল জঙ্গি হাফিজ সইদের ভাগ্নে। শনিবার রাত ৮টায় ঝিলাম জেলায় অজ্ঞাতপরিচয় মুখোশধারী ব্যক্তির গুলিতে নিহত হন তিনি।
মার্চের শুরুতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত আইএসপিআর অফিসার মেজর দানিয়াল পেশোয়ারে অজ্ঞাত হামলাকারীদের হাতে নিহত হন । ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লায় ভারতীয় সামরিক কনভয়ের উপর ভয়াবহ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন এই দানিয়াল। সূত্র মতে, পেশোয়ারে কিছু অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে মেজর দানিয়াল নিহত হন৷ ঘটনাস্থলেই তাঁকে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। হামলাকারীদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি, তবে এই হামলার পিছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের উপর চাপ রয়েছে। হাফিজ সঈদ লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা৷ ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার মতো বড় সন্ত্রাসবাকী হামলার জন্য দায়ী এই সইদ৷ বর্তমানে আমেরিকা সহ বহু দেশই চায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর ধ্বংস হোক। সেই কারণেই কি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একে একে কেটে ফেলছেহাফিজ সইদের হাত পা?
দ্বিতীয় যে যুক্তিটি শোনা যাচ্ছে, তা হল লস্কর-ই-তইবা এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার মধ্যে ক্ষমতার লড়াই চলছে। দু’জনেই একে অপরের লোকদের টার্গেট করছে। হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের হত্যা করে, জামাতের লোকেরা তাদের নেতা হওয়ার চেষ্টা করছে। সূত্র বলছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরাও এতে তাদের সহায়তা করছে। এটাও সম্ভব যে বেশ কয়েকটি কারণ একত্রিত হয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।