“আমি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চাই এবং আমি প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই,” শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় অর্থনৈতিক সহায়তার কথা উল্লেখ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। শপথ গ্রহণের পর গতকাল রাতে অনুষ্ঠিত এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ভারত এই বছরের জানুয়ারি থেকে ঋণ, ক্রেডিট লাইন এবং ক্রেডিট এক্সচেঞ্জের ক্ষেত্রে ঋণ জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন- "আমি অন্য ধাতু দিয়ে তৈরি": দু'দফার প্রধানমন্ত্রীত্বেই থেমে থাকতে নারাজ মোদি!
ভারত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠিত শ্রীলঙ্কার নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ এদেশও এবং দ্বীপরাষ্ট্রের জনগণের প্রতি কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতিও অব্যাহত থাকবে। ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (UNP) নেতা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহকে তড়িঘড়ি দায়িত্ব নিতে হয় কারণ সোমবার থেকে সরকারবিহীন অবস্থায় কাটিয়েছে এই দেশ। রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষর বড় ভাই এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর সমর্থক এবং সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের হিংসার ঘটনা শুরু হওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ব্যাপক হিংসার জেরে নয়জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হন।
“জনগণের কাছে পেট্রোল, ডিজেল এবং বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমি এই সমস্যার সমাধান করতে চাই,” বলেন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন শ্রীলঙ্কা। আংশিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার অভাবের কারণে সৃষ্ট এই অর্থনৈতিক সংকট। এর অর্থ, প্রধান খাদ্য এবং জ্বালানি আমদানির জন্য অর্থ বহনের ক্ষমতাই নেই এই দ্বীপরাষ্ট্রের। যার ফলে জীবনধারণের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ঘাটতি এবং চড়া দামে নাজেহাল মানুষ।
মাত্র একটি আসন থাকায় ২২৫ সদস্যের সংসদে তিনি তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, “সেটা হলে আমি সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করব।” বিক্ষোভের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা রাজি হলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
আরও পড়ুন- নৃশংস! শিং কেটে ফেলায় প্রবল রক্তপাত, জঙ্গলে ছটফটিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে একশৃঙ্গ গণ্ডার
ক্ষমতাসীন শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনা (SLPP), প্রধান বিরোধী দল SJB-এর একটি অংশ এবং অন্যান্য কয়েকটি দল সংসদে রনিল বিক্রমাসিংহের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখানোর জন্য তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পদক্ষেপের বিরোধিতাও করেছে বেশ কয়েকটি দল। জেভিপি এবং তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের দাবি, এই নিয়োগ অসাংবিধানিক।
গত ১ এপ্রিল, রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষ জরুরি অবস্থা জারি করেন, পাঁচ দিন পরে তা তুলেও নেন। পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করার পরে এবং সংসদের কাছে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের গ্রেপ্তার করার পর সরকার ৬ মে পুনরায় জরুরি অবস্থা জারি করে।