এরই মধ্যে তীব্র ঠান্ডার মধ্যে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানও সিরিয়ায় যাচ্ছেন৷ ভূমিকম্পের জেরে মাথার ছাদ হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে এসে দাঁড়িয়েছেন বহু মানুষ৷ তীব্র ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে তাঁদেরও প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷
আরও পড়ুন: একটা পরিবার পুরো শেষ! দু'হাতে কংক্রিট হাঁতড়ে ৩০ জন আত্মীয়ের খোঁজ যুবকের
advertisement
ভূমিকম্পের পর যেহেতু ৭২ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, তাই ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকা মানুষদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও প্রায় নেই বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ গত সোমবার ভোররাতে প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক এবং সিরিয়া৷ রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮৷ ঘুমের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েন লক্ষাধিক মানুষ৷
প্রথম থেকেই তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ৷ উদ্ধারকাজও তুলনামূলক ভাবে দ্রুত হচ্ছিল ইউরোপের দেশটিতে৷ কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় উদ্ধারকাজ নিয়ে প্রশ্ন ছিলই৷ তবে ভারত সহ অনেক দেশই সাহায্য পাঠিয়েছিল৷ তার উপর সিরিয়ার যে অংশ বিদ্রোহীদের হাতে হয়েছে, সেই এলাকায় প্রাণহানি, হতাহতের সংখ্যা নিয়েও ধোঁয়াশা ছিল৷ জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পের পর এই প্রথম বিদ্রোহীদের হাতে থাকা সিরিয়ার ওই অংশে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে একটি কনভয় পৌঁছেছে৷
আরও পড়ুন: ধ্বংসস্তুপের তলায় সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা, মায়ের পরিণতি হল করুণ
প্রায় এক দশক ধরে চলতে থাকা গৃহযুদ্ধের জেরে সিরিয়ার একটা বড় অংশে হাসপাতালও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে৷ এমনিতেই দেশ জুড়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানির সংকট রয়েছে৷ তার মধ্যে ভয়াল ভূমিকম্পে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে সিরিয়ার সাধারণ মানুষের৷ বিদ্রোহীদের হাতে থাকা সিরিয়ার এই অংশে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষের বাস৷ বেঁচে থাকার জন্য জরুরি সামগ্রী পেতে বাব আল-হাওয়া সীমান্তের ক্রসিংয়ের উপরে নির্ভরশীল তাঁরা৷ আপাতত এই সীমান্ত পার করেই ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে৷
অন্যদিকে তুরস্কে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত গাজিয়ানটেপ শহরে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা মাইনাস পাঁচ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছিল৷ ছাদ হারানো বহু মানুষ ঠান্ডা থেকে বাঁচতে অস্থায়ী তাঁবুর বদলে গাড়ির মধ্যে রাত কাটান৷ অনেকে আবার কম্বলের মধ্যে সন্তানকে জড়িয়ে গোটা রাত রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছেন৷ মানুষকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে জিম, মসজিদ, স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু ছাদ হারানো মানুষের সংখ্যায় তা নেহাতই অপ্রতুল৷ ফলে মোটা টাকা দিয়েই থাকার মতো জায়গা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে৷ যাঁদের সেই সামর্থ্য নেই, তাঁদের ঠিকানা হয় খোলা রাস্তা অথবা ত্রাণ শিবির৷