আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইমরান। বিশেষ আদালতের এই রায় তাঁর কাছে বড় ধাক্কা। কারণ, ১০ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় ভোটে লড়ার রাস্তা আপাতত বন্ধ হয়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। তাছাড়া, আদালতের তরফে স্পষ্ট নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আগামী ১০ বছর কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না ইমরান৷
advertisement
পাকিস্তানের ডন পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা গত মাসে ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে সৌদি যুবরাজের কাছ থেকে পাওয়া একটি গয়না সেট নিজেদের কাছে রাখার অভিযোগ আনেন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনও বৈদেশিক উপহার পেলে তা সরকারি তোষাখানায় জমা দেওয়া হয়৷ কখনওই তা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হয় না৷ ইমরান এই নীতি লঙ্ঘন করেন বলে অভিযোগ৷
এছাড়াও, ইমরানের খানের বিরুদ্ধে দেশের কূটনৈতিক তথ্য ফাঁসের অভিযোগ এনেছিল পাকিস্তানের ফেডারেল তদন্ত সংস্থা। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেছিলেন ইমরান খান স্বয়ং।
পাকিস্তানের বিশেষ আদালত গত মাসে নতুন করে সাইফার ট্রায়াল শুরু করে। ১৩ ডিসেম্বর এই মামলায় ইমরান খান এবং শাহ মাহমুদ কুরেশিকে দ্বিতীয়বার অভিযুক্ত করা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী, দুজনেই বর্তমানে জেলে রয়েছেন। অক্টোবরে এই মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রথমবার অভিযোগ আনা হয়। তবে দুজনের কেউই দোষ স্বীকার করেননি।
ইসলামাবাদ হাই কোর্ট সরকারের জেল ট্রায়ালের বিজ্ঞপ্তিকে ‘ভুল’ ঘোষণা করে, যার কারণে পুরো প্রক্রিয়াটি বাতিল করা হয়েছিল। এরপর প্রাক্তন স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় নতুন স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল নিয়োগ করা হয়। সেই সময় ইমরান খান বিচার প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘তামাশা’ হচ্ছে। তাঁর দাবি, বিচার ব্যবস্থা এবং প্রতিরক্ষা দফতর, উভয়ই সরকারের অঙ্গুলিহেলনে চলছে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ক্ষোভ উগরে দিয়েছে এক্স প্ল্যাটফর্মে। তারা লিখেছে, ‘গোটা পাকিস্তান ইমরান খান এবং শাহ মাহমুদ কুরেশির পক্ষে। এঁরা পাকিস্তানকে রক্ষা করেছেন। আদাজির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। ২০২২-এর মার্চ-এপ্রিলে ডোনাল্ড লু-এর নির্দেশে যা ঘটেছিল, কোনও জালিয়াতি বিচার তা বদলাতে পারবে না। উচ্চতর আদালত এই রায় ডাস্টবিনে ফেলে দেবে’।
বলে রাখা ভাল, ডোনাল্ড লু পাকিস্তানে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।