শুক্রবার দুপুরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে মায়ানমারের মান্দালয়ের কাছে। এরপর একাধিক আফটারশক অনুভূত হয়, যার মধ্যে একটি ছিল ৬.৪ মাত্রার। এতে বহু বহুতল ভেঙে পড়ে, সেতু ও বাঁধ ধসে যায়। উদ্ধারকাজ সহজ করতে, মায়ানমারের বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি দুই সপ্তাহের জন্য আংশিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেছে।
advertisement
৩০ মার্চ, ২০২৫ থেকে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ ছাড়া কোনও সামরিক অভিযান চালাবে না ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (PDF),” জানিয়েছে ছায়া সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’। উদ্ধারকাজ জোরকদমে চলছে, কিন্তু পরিস্থিতি বেশ কঠিন। ভারতসহ কয়েকটি দেশ সাহায্যের হাত বাড়ালেও মায়ানমারের অধিকাংশ বিমানবন্দরের অবস্থা খারাপ, যার ফলে ত্রাণবাহী বিমান নামতে পারছে না। রাজধানী নেইপিডো-তে বিদ্যুৎ, টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যস্ত।
ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, ৫০ (I) প্যারা ব্রিগেডের বিশেষ উদ্ধারকারী দল ‘অপারেশন ব্রহ্মা’-র আওতায় মায়ানমারে পৌঁছেছে। শনিবার এই মানবিক সহায়তা মিশনের অধীনে ভারত খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়েছে।
মোট ১১৮ জন বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত এই দল শনিবার রাত ১১টা৩০ মিনিটে (মায়ানমার সময়) নেইপিডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে।
ভারতীয় সেনার বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “মায়ানমারের মান্দালে, যা বর্তমান ঘাঁটি থেকে ১৬০ মাইল উত্তরে, সেখানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ১১:০০টার মধ্যে সেখানে পৌঁছনোর প্রস্তুতি চলছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় বায়ুসেনার মাধ্যমে সেনা মোতায়েন করা হতে পারে, পাশাপাশি সড়কপথেও একটি বাহিনী পাঠানোর চিন্তাভাবনা চলছে”।
গৃহযুদ্ধ ও সাময়িক যুদ্ধবিরতি
২০২১ সালে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি। এর ফলে মায়ানমারে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ চলছে, যা ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।
বিদেশ যাওয়ার আনন্দে আত্মহারা যুবক পৌঁছলেন এয়ারপোর্টে, পাসপোর্ট দেখাতেই শোরগোল…! আঠালো ওটা কী লেগে?
সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর, নির্বাসিত সরকার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘ ও এনজিওগুলির সহযোগিতায় উদ্ধার শিবির, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার জন্য কাজ করবে।
এদিকে, সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত, এই সরকারটি ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত, যারা জান্তা সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। ভূমিকম্পের ভয়াবহতার পাশাপাশি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এই সংকটকে আরও গভীর করে তুলছে।