নির্জন রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে ব্যক্তি, ঘিরে ফেলল RPF! 'তুমি কে?' জিজ্ঞাসা করতেই...শোরগোল! ফোন এল এয়ারপোর্ট থেকেও

নির্জন রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম। আচমকা সেখানে উপস্থিত এক অচেনা ব্যক্তি। আচরণ সন্দেহজনক, চোখে ভয় আর দুশ্চিন্তার ছাপ। হঠাৎই চারদিক থেকে ঘিরে ধরে RPF, একটাই প্রশ্ন—"তুমি কে?"

ঠিক তখনই যেন একটা রহস্য উন্মোচিত হল! আসলে কিছুক্ষণ আগেই চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে এক জরুরি ফোন আসে রেলস্টেশনে। ফোন পেয়েই সক্রিয় হয়ে ওঠে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF)। প্ল্যাটফর্মের প্রতিটি দিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় ট্রেন, শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি।

কিন্তু কী এমন ঘটেছিল যে এক ফোনেই রেলস্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল? কে এই সন্দেহভাজন ব্যক্তি? কীভাবে সে এত বড় পুলিশি অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠল?

তদন্তে নেমে পুলিশ ৩০০-র বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। দেখা যায়, দুই সন্দেহভাজন দ্রুত চেন্নাই বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছে। এরপরই পুলিশ বিমানবন্দরকে সতর্ক করে, নজরদারি বসানো হয় প্রতিটি ফ্লাইটের ওপর।

সকাল ৮টা থেকে ১২টা— চার ঘণ্টা ধরে প্রতিটি যাত্রীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। অবশেষে ধরা পড়ে দুই সন্দেহভাজন— জাফর গোলাম হুসেন ও সুরজ ওরফে মার্সিংহ আমজাদ। কিন্তু তারা নির্দোষ বলে দাবি করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, এক ঘণ্টার মধ্যেই ছিনতাই হয়েছিল ১৬টি সোনার চেন! ইস্ট কোস্ট রোড (ECR), আদয়ার, বেসান্ত নগর— একের পর এক এলাকা দুষ্কৃতীদের কবলে। বিশেষত, সকালবেলায় হাঁটতে বেরোনো প্রবীণ ও মহিলারা শিকার হন।

শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। পুলিশের কাছে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করল। সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নামে বিশেষ দল। তদন্তে নেমে পুলিশ ৩০০-র বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। দেখা যায়, দুই সন্দেহভাজন দ্রুত চেন্নাই বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছে। এরপরই পুলিশ বিমানবন্দরকে সতর্ক করে, নজরদারি বসানো হয় প্রতিটি ফ্লাইটের ওপর।

অবশেষে ধরা পড়ে দুই সন্দেহভাজন— জাফর গোলাম হুসেন ও সুরজ ওরফে মার্সিংহ আমজাদ। কিন্তু তারা নির্দোষ বলে দাবি করে। কিন্তু পুলিশের কড়া জেরায় তারা ভেঙে পড়ে। তারা জানায়, চুরি যাওয়া স্বর্ণালঙ্কার তাদের তৃতীয় সঙ্গীর কাছে রয়েছে, যে ইতিমধ্যেই বিজয়ওয়াড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে পিনাকিনি এক্সপ্রেস-এ।

জাফর ও সুরজের স্বীকারোক্তির পরই চেন্নাই পুলিশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে। ওয়্যারলেস সিস্টেমের মাধ্যমে ট্রেনের মোটরম্যান ও গার্ডকে জানিয়ে দেওয়া হয়। নেল্লোর রেলস্টেশনে তৈরি থাকে RPF-এর একটি বিশেষ দল।

ট্রেন থামতেই শুরু হয় অভিযান। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় ট্রেন, একে একে কোচ তল্লাশি চলে। তারপরই ধরা পড়ে সেই সন্দেহভাজন ব্যক্তি। তখনই ছড়িয়ে পড়ে সেই প্রশ্ন— "তুমি কে?"

RPF যখন সেই ব্যক্তিকে চেপে ধরে, তখন সে ভয়ে কাঁপছে। তল্লাশি চালাতেই তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৫ লক্ষ টাকার ৮টি স্বর্ণের চেন। তবে বাকি স্বর্ণালঙ্কারের হদিস তখনও পাওয়া যায়নি। ধৃতকে চেন্নাই ফিরিয়ে আনা হয় এবং তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়।

পুলিশ জানায়, তিনজন অভিযুক্তই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। এর মধ্যে সুরজ একাধিক চুরির ঘটনায় জড়িত, বিশেষ করে মারাইমলাই নগর, বন্দালুর, সেলাইয়ুর ও তাম্বারাম এলাকায়। তিনজনকেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।