TRENDING:

20 quadrillion ants : ২০-র পিছনে ১৫ টা শূন্য়! পৃথিবীতে পিঁপড়ের সংখ্যা জানলে হতভম্ব হয়ে যাবেন

Last Updated:

20 quadrillion ants: হিসেব মতো, এক একজন মানুষের মাথা পিছু, প্রায় ২.৫ মিলিয়ন পিঁপড়ে রয়েছে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পৃথিবীতে পিঁপড়ের সংখ্যা নির্ধারণ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা যা পেয়েছেন সেটা কল্পনাতীত। গবেষকদের অনুমান করা সংখ্যায় হতবাক গোটা পৃথিবী।
এক একজন মানুষের মাথা পিছু, প্রায় ২.৫ মিলিয়ন পিঁপড়ে রয়েছে
এক একজন মানুষের মাথা পিছু, প্রায় ২.৫ মিলিয়ন পিঁপড়ে রয়েছে
advertisement

কথায় আছে, “কোনও একটি মৌমাছি দিয়ে একটা গোটা মৌচাক হয় না, তেমনই একটি পিঁপড়ে উপনিবেশ বানাতে পারে না।” কথাটা কতটা সত্যি, সেটা আর একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নতুন গবেষণা। বাস্তবেই আমাদের সুজলা সুফলা বসুন্ধরা কার্যত পিঁপড়েরই পৃথিবী, আমরা মানুষরা তো খালি ঘুরতে এসেছি।

সদ্য প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রায় কুড়ি কোয়াড্রিলিয়ন পিঁপড়ে আওয়াজ করে চলেছে নিজের মনে একাগ্রচিত্তে। ২০ কোয়াড্রিলিয়ন মানে ২০-র পিছনে ১৫টা শূন্য বসালে যেটা দাঁড়ায়। (20 quadrillion ants)

advertisement

এই সংখ্যাটা শুধু যে বিস্ময়কর তাই নয়, সংখ্যাটা অবিশ্বাস্য। ২০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ বা ২০,০০০ ট্রিলিয়ন- সংখ্যাটা পিঁপড়ের আশ্চর্যজনক সর্বব্যাপিতার মাত্রাকে সবার সামনে তুলে ধরেছে। আর এর ফলে বিজ্ঞানীরা আরও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন যে, বাস্তুতন্ত্র যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কীটপতঙ্গ ব্যাপকভাবে মরে গিয়ে প্রবল ক্ষতি করতে পারে পৃথিবীর।

আরও পড়ুন : মায়ের সঙ্গে গভীর বনে রাতের অন্ধকারে ঘুরছে কালো রঙের বাঘের ছানা! বিরল ভিডিও ভাইরাল ঝড়ের গতিতে

advertisement

প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা সোমবার প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে, হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী ৪৮৯টি গবেষণা বিশ্লেষণ করেছেন এবং তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে পৃথিবীতে পিঁপড়ের মোট ভরের ওজন প্রায় ১২ মেগাটন ড্রাই বা শুকনো কার্বন। ড্রাই বা শুকনো কার্বন দ্বারাই প্রাণীদের ওজন মাপা হয় ।

অন্য ভাবে বলতে গেলে, যদি সমস্ত পিঁপড়েকে মাটি থেকে তুলে একটি দাঁড়িপাল্লায় রাখা হয়, তবে তারা একসঙ্গে রাখা সমস্ত বন্য পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের চেয়েও বেশি হবে।হিসেব মতো, এক একজন মানুষের মাথা পিছু, প্রায় ২.৫ মিলিয়ন পিঁপড়ে রয়েছে।

advertisement

গবেষণাপত্রের একজন প্রধান লেখক প্যাট্রিক শুলথাইস, জুম সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "এটি অকল্পনীয়।" প্যাট্রিক শুলথাইস বর্তমানে জার্মানির ওয়ারজবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক। তিনি আরও জানিয়েছেন, "একটি পিঁপড়ের স্তূপে ২০ কোয়াড্রিলিয়ন পিঁপড়ে নিশ্চয়ই কল্পনা করতে পারি না। সেটা ভাবাও ঠিক হবে না।"

আরও পড়ুন :  এক বিশেষ পেশার যুবকদের যোগাযোগ করতে নিষেধ! সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিয়ের বিজ্ঞাপন ভাইরাল

advertisement

এই সমস্ত পোকামাকড় গণনা করা, অন্তত তাদের সংখ্যা সম্বন্ধে একটি সঠিক অনুমান নিয়ে আসার জন্য, কম করে একশো বছর ধরে বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার গবেষকের থেকে তথ্য একত্রিত করা দরকার, শুলথাইস যোগ করেছেন। আর সেটাই করা হয়েছে।

পিঁপড়ের মতো যে সব পোকামাকড় প্রচুর পরিমাণে আছে, তাদের গণনা করার জন্য, দুটি উপায় রয়েছে: পাতার আবর্জনার নমুনা নিতে মাটিতে নেমে পড়তে হবে অথবা ছোট পিটফল বা ফাঁদে একটি প্লাস্টিকের কাপ রেখে দিতে হবে। আর অপেক্ষা করতে হবে, কখন পিঁপড়েরা তার মধ্যে পিছলে পড়ে যায়। গবেষকরা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণেই সমীক্ষার জন্য গিয়েছেন, যদিও আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু জায়গা থেকে পাওয়া তথ্যের এখনও অভাব রয়েছে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। "বিশ্বব্যাপী সবার প্রচেষ্টা ছাড়া এই পরিমাপ কিছুতেই সম্ভব হত না," শুলথিস বলেছিলেন।

মানুষের মতোই, কার্যত প্রতিটি মহাদেশ এবং সব ধরনের আবাসস্থল জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পিঁপড়ে। গবেষক দলের মতে, গ্রীষ্মপ্রধান এবং উপ-গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের মাটিতে বসবাসকারী পিঁপড়ের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হলেও তারা পৃথিবীর শীতলতম জায়গাগুলি ছাড়া প্রায় সর্বত্রই পাওয়া যায়।

প্রখ্যাত লেখক এবং পিঁপড়ে বিজ্ঞানী ই ও উইলসন একবার বলেছিলেন: “সম্ভবত অ্যান্টার্কটিকা বা উচ্চ আর্কটিক অঞ্চল ছাড়া পিঁপড়ে নেই এমন জায়গা খুজে পাওয়া শক্ত । আর তাই আমি ওই সব অঞ্চল যাই-ও না। মানব সংস্কৃতি যতই আলাদা হোক না কেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ যতই অনুকূল হোক না কেন, পিঁপড়ে সেখানে থাকবেই।"

প্রকৃতপক্ষে, পৃথিবীর ভালর জন্য পিঁপড়ের সঙ্গে মানুষের সহাবস্থান খুবই দরকার। মাটির মধ্যে সুড়ঙ্গ বিস্তার করে তারা মাটির মধ্যে বায়ু প্রবাহ বজায় রাখে। বীজ অঙ্কুরিত করার জন্য মাটির নিচে টেনে নিয়ে যায় বীজকে। বলতে বাধা নেই যে, তারা আর্থ্রোপড, পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের খাদ্যের উৎস হিসেবে কাজ করে।

তবে আশঙ্কার বিষয় হল, জার্মানি, পুয়ের্তো রিকো এবং অন্যত্র কীটতত্ত্ববিদরা পিঁপড়ে ছাড়াও কীটপতঙ্গের জনসংখ্যার হ্রাস দেখতে পেয়েছেন। আবাসস্থলের ধ্বংস হয়ে যাওয়া, কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহার এবং জলবায়ুর পরিবর্তন এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সামনে আমাদের মুখোমুখি করাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা যার নাম রেখেছেন, ‘বাগপোক্যালাইপস’ বা কীটপতঙ্গদের অবলুপ্তি । ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ৪০ শতাংশের বেশি কীটপতঙ্গের প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে। প্রজাপতি এবং বিটল অবলুপ্তির সবচেয়ে প্রথম সারিতে।

যদিও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন যে পিঁপড়ের সংখ্যাও কমছে কি না। "সত্যি বলতে," শুলথিস বলছেন, "আমাদের এখনও এ বিষয়ে কোন ধারণা নেই।"

পরবর্তী গবেষণায় সেই প্রশ্নর উত্তর খুঁজতে চান শুলথিসের দলের সব সদস্য। "আমরা এখনও পিঁপড়ের এই প্রাচুর্যে কোনও সাময়িক পরিবর্তন দেখানোর চেষ্টা করিনি," সাবিন নুটেন বলেছেন। সাবিন নুটেন একজন কীট বাস্তুবিদ এবং এই গবেষণার সহ-প্রধান লেখক। "এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী গবেষণায় জানতে পারব।"

কয়েক দশক ধরে, বিজ্ঞানীরা প্রাণীদের আচরণের তত্ত্বগুলি পরীক্ষা করার জন্য গবেষণাগারে পিঁপড়ের স্তূপের দিকে একাগ্রচিত্তে তাকিয়ে আছেন। পিঁপড়ে বিজ্ঞানী উইলসন, প্রাণীদের মধ্যে সহযোগিতার জন্য জেনেটিক ভিত্তি ব্যাখ্যা করতে পিঁপড়ের বিষয়ে তাঁর অন্তর্দৃষ্টি ব্যবহার করেছিলেন এবং প্রাণ সংরক্ষণের যোগ্য জীবনের নিখুঁত জীববৈচিত্র্যকে বিশ্লেষণ করতেও পিঁপড়ের বিষয়ের বোধকেই কাজে লাগিয়েছিলেন। উইলসন গত বছর মারা যান।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

নব্বইয়ের দশকে, উইলসন এবং জীববিজ্ঞানী বার্ট হলডোবলার যৌথ ভাবে পৃথিবীতে বসবাসকারী পিঁপড়ের জনসংখ্যা সম্পর্কে একটি মোটামুটি অনুমান করেছিলেন। তাঁদের অনুমান ছিল সংখ্যাটা প্রায় ১০ কোয়াড্রিলিয়ন। যে সংখাটা সোমবার প্রকাশিত অনুমানের সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রাখে।

বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
20 quadrillion ants : ২০-র পিছনে ১৫ টা শূন্য়! পৃথিবীতে পিঁপড়ের সংখ্যা জানলে হতভম্ব হয়ে যাবেন
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল