সেই সঙ্গে কালীপুজোর রাতে বাজি পোড়ানোর আসরে পটকায় শ্রেষ্ঠ বুড়িমার চকলেট বোমা, বুড়িমার চকলেট বোমার শব্দে সকলকে টেক্কা দিত, তাতেই মন জুড়াত ছেলে ছোকরাদের। তাই হাতে হাতেই দেখা যেত 'বুড়িমা' চকলেট। এই বুড়িমা কে? এই বুড়িমা হলেন দেশভাগের সময় পূর্ব পাকিস্তান থেকে হাওড়ার বেলুড়ে এসেছিলেন, তার তৈরি বাজি শুধু বাংলা নয়, বাংলার বাইরে প্রায় দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সুনামের সঙ্গে।
advertisement
আরও পড়ুন: ইডি, সিবিআই তদন্তের মাঝেই d.el.ed কলেজ গুলোর অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক, নজরে আজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ
আরও পড়ুন: বিপর্যয়ে বিধ্বস্তদের পাশে দাঁড়ালেন মমতা, অভিভাবক স্নেহে শিশুকে নিলেন কোলে
এই বুড়িমার আসল নাম অন্নপূর্ণা দাস, যাঁর প্রথম জীবন ছিল অতি কষ্টের অর্থাৎ দেশ ভাগের সময় প্রথমে ভারতে এসে শরণার্থী হিসেবে কয়েক বছর কাটানোর পর। কলকাতা তারপর, হাওড়া বেলুড়ে আসেন অন্নপূর্ণা দাস, সে সময় তাঁর অতি কষ্টে দিন কাটে বলে জানা যায়, এক কন্যা সন্তান ও দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে প্রথমে শুরু করেছিলেন কাঁচা সবজির ব্যবসা। তার পরবর্তীতে বিড়ি বাধাই কাজ করে অর্থ জমিয়ে নিজের বিড়ি তৈরীর কারখানা করেন। সেই সঙ্গে একটি দোকান ঘর নেন, সেই দোকানে খেলনা ও অন্যান্য জিনিস বিক্রি করতেন।
সারা বছর সিজন অনুযায়ী যেমন বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি কালী পুজোতে বাজি বিক্রি করতেন। তার দোকানে বিক্রি হওয়া বাজি, ধীরে ধীরে তার দোকানে বিক্রি হওয়া বাজির চাহিদা বাড়ে, ছেলে ছোকরারা মুখে মুখে বুড়িমার বাজি বলতেন, সেই কথা বুড়িমার কানে শোনার পর, তিনি ভাবেন বাজি কিনে বিক্রি করে যা লাভ হয় যদি নিজে তৈরি করা যেত তাহলে অনেক বেশি লাভ হবে। সেই ভাবনা থেকেই নিজে বাজি তৈরি শেখেন হাওড়ার বাখরার এক বাজি কারিগরের কাছে।
তারপর বাজি তৈরির কারখানা করেন সরকারি যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে। সেই থেকেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করে বুড়িমার বাজি৷ তবে ১৯৯৫-৯৬ সালে সরকারের নির্দেশিকায় ৯০ ডেসিবেল বা তার বেশি শব্দের বাজি বন্ধ হয়। তাতে কিছুটা বাজার নরম হলেও বুড়িমার অন্যান্য বাজি, ফুলজুরি চরকি রং মশাল তুবড়ি-সহ নানা বাজির চাহিদা বেশ।
রাকেশ মাইতি