বর্ধমানের রাজার দেওয়ানজী ছিলেন,হরনারায়ন বসু। হাওড়ার জগৎবল্লভপুর ব্লকের গোবিন্দপুর ছিল তার গ্রাম। আজও গোবিন্দপুরে রয়েছে সেই মন্দিরটি। সৌখিন ইট ও টালির কারুকর্য ময় ভগ্নপ্রায় শিব মন্দির আজও বর্তমান। এখনও চোখে পড়ে মন্দিরের দেওয়ালে চুনসুরকিরসৌখিন কারুকার্য। মন্দিরটির উচ্চতা কমবেশি প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ফুট। চারটি চূড়া ভেঙে পঞ্চ চূড়া বিশিষ্টকরা হয়েছিল। এই মন্দির নাকি নবরত্ন বিশিষ্ট ছিল জানা যায় লোক মুখে। মন্দিরের নকশা কারুকার্য হুবহু মিল ছিল তৎকালীন বর্ধমান রাজার শিব মন্দিরের সঙ্গে।
advertisement
এমনকি জানা যায়, রাজার মন্দিরকেও উচ্চতায় নাকি ছাপিয়ে গিয়েছিল এই মন্দির।রাজার রাজত্বে তাঁর মন্দিরকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে দেওয়ানজী তৈরি মন্দির। এই খবর ছড়িয়ে পড়তে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। রাজার কাছে মন্দিরের খবর পৌঁছেছে। রাজা জানতে পারলে ফল মন্দ হবে। দেওয়ানজি তা বুঝেই, সুদূর বর্ধমান থেকে বহিরা এবং অন্য এক সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে আসে। রাজা এসে পৌঁছানোর আগেই। রাতারাতি মন্দিরের চারটি চূড়া তাদের দিয়ে ভেঙে নামিয়ে নেয় দেওয়ানজী।
এক রাতে মন্দিরের বিশালচার চূড়া ভেঙে ফেলার সুবাদে। ওই দুই সম্প্রদায় কে পুরস্কৃত করেন দেওয়ানজি। রাজা স্বচক্ষে দেখেন নবরত্ন নয়, পাঁচ চূড়ার মন্দির। সেই থেকে গোবিন্দপুরের এই শিব মন্দির নবরত্ন মন্দির থেকে পঞ্চাচূড়ার মন্দিরে পরিণত হয়। কয়েক শতক ধরে সেখানেই কষ্টিপাথরের শিব লিঙ্গের অবস্থান। তবে পরিচর্যার অভাবে মন্দিরের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে থাকে। গ্রামের মানুষ বিপদ বুঝে মন্দিরের পাশেই একটি ছোট্ট মন্দির নির্মাণ করে।
কয়েক বছর হল সেখানেই শিবলিঙ্গ মূর্তিটি রেখে পুজো করে আসছে। প্রতিদিন দুপুর বারোটায় নিত্য পুজো। শিবরাত্রি এবং বৈশাখ মাসে অনুষ্ঠিত হয় বাৎসরিক পুজো। রাজার মন্দিরের আদলে পুরনো সেই মন্দির লোকমুখে এক রাতের মন্দির নামেই পরিচিত রয়ে গেছে আজও।
রাকেশ মাইতি





