ছোট্ট টালির ঘর। বাবা পেশায় একজন দিনমজুর। এই বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন রাহুল। তবে বাড়িতে বসে থাকলে তাঁদের আর পেতে ভাত উঠবে না। তাই বিকেল হতে না হতেই মাকে সঙ্গে নিয়ে রাহুল বেরিয়ে পড়ে চায়ের দোকান খুলতে। শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে স্কুলের ব্যাগে ভর্তি করে নিয়ে নেয় বাদামের প্যাকেট। সন্ধ্যা হতেই শুরু হয় তার হকারি। এত কিছুর পরেও নিজের পড়াশোনা ও বোনের পড়াশোনার জন্য রসদ তিনি নিজেই উপার্জন করছেন।
advertisement
রাহুলের মা জানান, ছোট থেকেই স্নায়বিক সমস্যার জন্য রাহুলবিশেষ ভাবে সক্ষম। তাঁদের পরিবারের এত সামর্থ্য ছিল না যে ছেলের ভাল করে চিকিৎসা করাবেন। তবে তাঁদের ছেলে যে এই বয়সেই সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে হাল ধরেছে সংসারের। নিজের পড়াশোনা, বোনের পড়ালেখা-সবেরই দায়িত্ব এখন রাহুলের কাঁধে।
আরও পড়ুন : অবিশ্বাস্য! বসিরহাটে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে পড়ল রাশি রাশি প্রাচীন রুপোর মুদ্রা
রাহুলকে প্রশ্ন করা হলে যে জানান, তাঁরা একটি ছোট্ট একচালা ভাড়া বাড়িতে থাকে। দরমার ঘর মাথায় টালির চাল। রাহুলের ইচ্ছা কখনও জমি কিনে নিজের একটা বাড়ি বানাবেন। সেখানে মা, বাবা, বোনকে নিয়ে খুব আনন্দের সঙ্গে থাকবেন তিনি। তাই জন্যেই সে এখন থেকে তিল তিল করে একটা একটা করে টাকা জমাতে শুরু করেছেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা শিখে কখনও রেলে চাকরি করবে।
আরও পড়ুন : 'আমার ছেলের আর বাড়ি আসা হল না', মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে শোকস্তব্ধ মেধাবী শাকিলের মা
তবে পড়াশোনা কতদূর হবে? তা নিয়ে এখন বেশ দুশ্চিন্তা। তবুও নিজের পড়াশোনাকে কোনদিনও পিছনে রাখতে চাননি রাহুল। সংসারের হাল ধরতে এখন থেকেই তিনি প্রস্তুত। প্রতিবন্ধকতা যে কোনদিনও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তার জীবন্ত উদাহরণ হুগলির চুঁচুড়ার রাহুল।