TRENDING:

Expalined: ভালো খবর, তৈরিতে সময় লেগেছে ৩০ বছরের বেশি, Malaria Vaccine সম্পর্কে এই তথ্যগুলো না জানলেই নয়!

Last Updated:

ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (GlaxoSmithKline) বা জিএসকে এই টিকা (Malaria Vaccine) তৈরি করেছে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: বিশ্ব করোনাভাইরাস অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন কিছু এলে, সেটা অবশ্যই খুশির খবর। আর সেই খুশির খবরটি হল বিশ্বের প্রথম ম্যালেরিয়ার টিকাকে (Malaria Vaccine) অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। কোভিড অতিমারী সমাজ, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু তার চেয়েও এটা চরম সত্য যে ম্যালেরিয়া দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশগুলিতে, বিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকাতে অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ। আসলে ম্যালরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য অনুমোদিত কোনও টিকা এত দিন ছিল না।
more than 30 years in the making how malaria vaccine - Photo-AP
more than 30 years in the making how malaria vaccine - Photo-AP
advertisement

ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (GlaxoSmithKline) বা জিএসকে এই টিকা তৈরি করেছে। এর নাম আরটিএসএস (RTS,S), যার ব্র্যান্ড নাম মসকুরিক্স (Mosquirix)। প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছ, ম্য়ালেরিয়ার সঙ্গে লড়তে সক্ষম এই টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যে এই টিকা ম্যালেরিয়া এবং শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে কম করে। ম্যালেরিয়ার মাঝারি থেকে উচ্চ সংক্রমক অঞ্চলে বসবাসকারী শিশুদের জন্য এই টিকার ব্যাপক ব্যবহারের জন্য চলতি বছরের অক্টোবরে সুপারিশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে টিকাটি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তৈরির কাজ চলছিল। নির্মাতারা ২০১৫ সালে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, যার পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘানা, মালাউই ও কেনিয়ায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে টিকাকরণ শুরু করে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই তিনটি দেশে প্রায় ৮ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া হয়। টিকা দেওয়ার পর ফলাফল দেখেই তার পর বিশ্বব্যাপী ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে মসকুরিক্স প্রথম ম্যালেরিয়ার টিকা, যা ক্লিনিকাল ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এছাড়াও ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি (European Medicines Agency) থেকে প্রাপ্ত অনুমোদনও রয়েছে এই টিকার।

advertisement

আরও পড়ুন - Weather Update: পাঁচ জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করল IMD, কী বলছে West Bengal-র আবহাওয়া

বিশ্বে এবং ভারতে ম্যালেরিয়া সমস্যা ঠিক কতটা ভয়াবহ?

সংক্রামিত মহিলা অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ানো ম্যালেরিয়া প্রাণঘাতী। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধযোগ্য এবং নিরাময়যোগ্য হলেও ২০১৯ সালে প্রায় ২৩ কোটি মানুষ এতে আক্রান্ত হন। প্রায় ৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে বিশ্বের মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশেই ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ সব চেয়ে বেশি। ২০১৯ সালে বিশ্বে ম্যালেরিয়ার মোট সংক্রমণ ও মৃত্যুর ৯৪ শতাংশই আফ্রিকার। এই রোগটি বিশেষ করে শিশুদের প্রভাবিত করে এবং ৫ বছরের কম বয়সীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি। ২০১৯ সালে বিশ্বে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ বা ২.৭৪ লাখ শিশুই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের।

advertisement

আরও পড়ুন - খুদের বোলিংয়ে মুগ্ধ! Sachin Tendulkar Video শেয়ার করতেই তা Viral

ভারতে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য কমেছে। ওয়ার্ল্ড ম্যালেরিয়া রিপোর্ট (World Malaria Report 2020) তুলে ধরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক গত বছর ডিসেম্বরে বলেছিল যে, ভারতে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে ২০ মিলিয়ন থেকে ৬ মিলিয়ন। মন্ত্রক আরও জানিয়েছিল যে ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমেছে যথাক্রমে ৭১.৮ শতাংশ ও ৭৩.৯ শতাংশ।

advertisement

টিকা কী ভাবে কাজ করে?

মসকুরিক্স একটি রিকম্বিন্যান্ট প্রোটিন-ভিত্তিক টিকা, যার কাজ হল, রোগের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য ইমিউনো সিস্টেমকে (Immune System) উৎসাহিত করা। এটি সম্পূর্ণ প্যাথোজেনের পরিবর্তে শুদ্ধ হওয়া প্যাথোজেনের নির্দিষ্ট টুকরো ঢোকানোর উপর নির্ভর করে কাজ করে। এই নির্দিষ্ট টুকরোগুলির বিশেষভাবে রোগ প্রতিরোধক কোষকে উদ্দীপিত করার ক্ষমতা আছে। যেহেতু এই টুকরোগুলি রোগ সৃষ্টি করতে অক্ষম, তাই সাব -ইউনিট টিকাকে বেশ নিরাপদ বলে মনে করা হয়।

advertisement

আরও পড়ুন - Zodiac Signs: নাটুকে স্বভাবের হন এই পাঁচ রাশির মানুষেরা! জেনে নিন সমঝে চলুন

মসকুরিক্স চার ডোজের টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশে এর প্রথম ডোজ ৫ মাস বয়সে দেওয়া উচিত। ষষ্ঠ এবং সপ্তম মাসে দু'টি ফলো-আপ ডোজ দেওয়া হয় এবং কমপক্ষে ১৮ মাসে একটি চূড়ান্ত বুস্টার দেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে তিনটি দেশে ২ বছর ধরে চলা টিকাকরণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি শিশু এই টিকা থেকে উপকৃত হচ্ছে। এছাডা়ও এই টিকা শিশুদের মধ্যে মারাত্মক ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে।

ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরি করতে এত সময় লাগল কেন?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ম্যালেরিয়া প্রোগ্রামের (WHO Global Malaria Programme) ডিরেক্টর পেড্রো আলোনসো (Pedro Alonso) জানিয়েছেন যে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ম্যালেরিয়ার টিকার সন্ধানে ছিলেন। ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন জানিয়েছে, ৩০ বছরেরও বেশি সময় গবেষণার পর তাদের টিকা মাত্র ৬ বছর আগে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল।

ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরি করা কঠিন হওয়ার একটি প্রধান কারণ হল পরজীবীর স্বভাব। ইউএস ডিজিজ ওয়াচডগের মতে, ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরিতে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাজারের অভাব, অল্প কিছু ডেভেলপার এবং একটি পরজীবীর বিরুদ্ধে টিকা তৈরির প্রযুক্তিগত জটিলতা। ম্যালেরিয়া পরজীবীদের একটি জটিল জীবনচক্র রয়েছে এবং ম্যালেরিয়া সংক্রমণের জটিল প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে সক্রিয় কার্যকারিতা নেই। এছাড়া জেনেটিকালি জটিল ম্যালেরিয়া পরজীবীদের ১০০টিরও বেশি প্রকার রয়েছে, যার কারণে টিকা নিলেই আজীবন সুরক্ষা পাওয়া যায় না।

টিকা শুধুমাত্র প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম জাতকে টার্গেট করে, যা আফ্রিকা মহাদেশে মারাত্মক ম্যালেরিয়া ছড়ানোর জন্য দায়ী। প্লাজমোডিয়াম ভিভ্যাক্সের মতো আরেকটি জাত রয়েছে, যা পি ফ্যালসিপেরামের সঙ্গে ভারতে সংক্রমণের জন্যও দায়ী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে টিকা পরজীবীর অন্যান্য জাতের বিরুদ্ধে কাজ করবে না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ওড়িশা, ছত্তিসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, মেঘালয়, মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্তের মধ্যে ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।

পরজীবীর জটিলতা, যার বিরুদ্ধে টিকা নির্মাতারা কার্যকারিতার হার অর্জনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। মসকুরিক্স টিকার কার্যকারিতা হার প্রায় ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ এটি পি ফ্যালসিপেরাম দ্বারা সৃষ্ট ম্যালেরিয়ার ১০টি সংক্রমণের ৪টির প্রতিরোধ করতে পারে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে টিকাকে কখনই মশারির ব্যবহার, কীটনাশকের ব্যবহারের পরিপূরক বলা যায় না।

ম্যালেরিয়ার টিকা কী ভাবে পাওয়া যাবে?

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
১৭ রাজ্য পাড়ি দিয়ে শান্তির বার্তা — স্কুটিতে একা অভিযানে বর্ধমানের শিক্ষিকা
আরও দেখুন

জিএসকে বলেছে যে তারা বার্ষিক ১৫ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করবে। ভারতে কোভ্যাক্সিনের (Covaxin) নির্মাতা ভারত বায়োটেকের (Bharat Biotech) সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছে। জিএসকে টিকার তৈরির প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে ভারত বায়োটেককে। তাই ভারতে ম্যালেরিয়ার টিকা শীঘ্রই পাওয়া যেতে পারে।

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Expalined: ভালো খবর, তৈরিতে সময় লেগেছে ৩০ বছরের বেশি, Malaria Vaccine সম্পর্কে এই তথ্যগুলো না জানলেই নয়!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল