TRENDING:

EXPLAINED: কেন আধার নম্বরের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণ চায় নির্বাচন কমিশন?

Last Updated:

কেউ যদি ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ না করাতে চায়, সেক্ষেত্রে তাকে জোর করা হবে না। (Link Voter IDs To Aadhaar Card)

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগেই সংসদের (Parliament) দুই কক্ষেই পাস হয়েছে নির্বাচনী আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২১ (Election Laws (Amendment) Bill, 2021)। এই বিলের মাধ্যমে কয়েকটি নির্বাচনী সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (Representation of People’s Act, 1950), ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে (Representation of People’s Act, 1951) সংশোধনী আনা হয়েছে। ১৯৫০ সালের আইনে নির্বাচনের জন্য আসন বণ্টন এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ভোটারদের যোগ্যতা এবং ভোটার তালিকা তৈরির বিধান রয়েছে। ১৯৫১ সালের আইনে নির্বাচন পরিচালনা এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধ ও বিরোধের বিধান রয়েছে। নতুন বিলে ভোটার আইডি কার্ড এবং আধার কার্ডের লিঙ্ক (Voter ID-Aadhaar link) করার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে, এক্ষেত্রে, গোপনীয়তার অধিকার মেনে নিয়ম ব্যক্তির ইচ্ছা অনুযায়ী খাটবে। অর্থাৎ কেউ যদি ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ না করাতে চায়, সেক্ষেত্রে তাকে জোর করা হবে না। আগামী বছর গোয়া, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ এবং মণিপুরে বিধানসভা নির্বাচন। তাই ওই সময় থেকেই এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Federal Digital Identity: The proposal will reportedly be available in the public domain soon.
Federal Digital Identity: The proposal will reportedly be available in the public domain soon.
advertisement

নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) দাবি, সরকারের তরফে মান্যতা দেওয়ার আগে এটি পাইলট প্রকল্প হিসাবে আনা হয়েছিল, তাতে সাফল্য মিলেছে। সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়াও এই নিয়মের সপক্ষেই ছিল। এই নতুন নিয়মে একদিকে যেমন নকল ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড দেখিয়ে ভুয়ো ভোট রোখা যাবে, একই সঙ্গে ভোটার তালিকা (Electoral Roll) তথ্য আরও স্বচ্ছ থাকবে। অন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংস্কারগুলির মধ্যে রয়েছে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য বছরে চারবার ভোটার তালিকায় নাম তোলার বিষয়টি। বর্তমানে, একটি নির্দিষ্ট বছরে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছর বয়সী ব্যক্তিরা ভোটার হিসাবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার শুধুমাত্র একটি সুযোগ পান।

advertisement

আরও পড়ুন: ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকা সুরক্ষা না দিলে আমাদের কী করা উচিত?

ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য বছরে একাধিক দিনের দাবি জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ECI)। তাদের যুক্তি ছিল, শুধুমাত্র একটি কাট-অফ তারিখের কারণে ২ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর হচ্ছিল, তারা ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারছিল না। নাম তুলতে গেলে তাদের আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। এখন আইন সংশোধনী বিলে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য বছরে চারদিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

advertisement

আরও পড়ুন: এই ৫ লক্ষণ দেখলেই পরামর্শ নিন চিকিৎসকের, ওমিক্রনের উপসর্গ হয় এরকমই!

নির্বাচন কমিশনের তরফে সার্ভিস ভোটারদের (Service Voters) জন্য আইনকে লিঙ্গ নিরপেক্ষ (Gender Neutral) করা হয়েছে। আগে কেবল পুরুষ সার্ভিস অফিসারদের স্ত্রীদের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল, মহিলা সার্ভিস অফিসার হলে, তার স্বামী ভোট দিতে পারত না। এবার সেই নিয়মেই পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সার্ভিস অফিসারের স্বামী বা স্ত্রীকে ভোট দেওয়ার সমান অধিকার দেওয়া হবে। এছাডা়ও, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কমিশনকে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যে কোনও প্রতিষ্ঠান বা চত্বর অধিগ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগে কেবল স্কুল, কলেজ বা সরকারি কোনও দফতরই অধিগ্রহণ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হত। এবার থেকে এই বিলের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনও চত্বর বা জায়গা অধিগ্রহণ করতে পারে। প্রয়োজনগুলির মধ্যে রয়েছে গণনার জন্য প্রাঙ্গণ ব্যবহার, ভোটিং মেশিন এবং ভোট-সম্পর্কিত উপাদান সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও ভোটগ্রহণ কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা।

advertisement

কেন আধার নম্বরের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণ?

গত বছরের মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক (Union Law Ministry) সংসদকে বলেছিল যে নির্বাচন কমিশন আধার ডেটাবেসকে (Aadhaar Database) ত্রুটি-মুক্ত ভোটার তালিকার কাজ নিশ্চিত করতে এবং ভুয়ো ভোটারদের তালিকা থেকে বের করতে ব্যবহার করতে চাইছে। যার জন্য ১৯৫১ সালের প্রতিনিধিত্ব আইনে একটি সংশোধনীর প্রয়োজন হবে। এই উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালের আধার আইনও সংশোধনের প্রয়োজন হবে। তৎকালীন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ একটি লিখিত উত্তরে লোকসভাকে বলেছিলেন যে আধার ইকোসিস্টেম-সহ ভোটার আইডি চালু করা প্রয়োজন। তাতে বিভিন্ন জায়গায় একই ব্যক্তির একাধিক তালিকায় নাম থাকা রোখা যাবে। ২০১৯ সালের অগাস্টে নির্বাচন কমিশন ভোটার আইডি এবং আধার লিঙ্কের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। তারা বলেছিল যে নির্বাচনী আইন সংশোধন করা উচিত। পোল প্যানেল দাবি করেছে যে আধার-ভোটার কার্ড সংযুক্তিকরণ পাইলট প্রকল্প হিসাবে আনা হয়েছিল, তাতে সাফল্য মিলেছে। সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়াও এই নিয়মের সপক্ষেই ছিল।

advertisement

আরও পড়ুন: আধার- রেশন সংযুক্তিকরণের সময়সীমা বৃদ্ধির সম্ভাবনা, বড় নির্দেশ হাইকোর্টের

ভোটার কার্ড-আধার সংযুক্তিকরণ নিয়ে উত্থাপিত সমস্যাগুলি কী কী?

কর্মী, জন অভিযোগ, আইন ও বিচার সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি (Parliamentary Standing Committee on Personnel, Public Grievances, Law and Justice) গত বছরের মার্চে পেশ করা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে নির্বাচন কমিশন ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করেছিল। তার নাম ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল রোল পিউরিফিকেশন অ্যান্ড অথেনটিকেশন প্রোগ্রাম (NERPAP), যাতে ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো ভোটারদের নাম বাদ দিতে আধার নম্বর ব্যবহার করা হয়। যাইহোক, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে গোপনীয়তার অধিকারের বিষয়টি মাথায় রেখে ওই বছরের অগাস্টে এই নিয়মে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। কিন্তু স্থায়ী কমিটি উল্লেখ করেছে যে ওই সংক্ষিপ্ত সময়ে নির্বাচন কমিশন প্রায় ৩২ কোটি ভোটারের আধার নম্বর সংগ্রহ করে। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর ২০১৯ সালে কমিশন এই বিষয়ে আইন আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বলে। ২০২০ সালে তৎকালীন আইনমন্ত্রী সংসদকে জানিয়েছিলেন যে নির্বাচন কমিশন বলেছে যে তারা ভোটার তালিকার ডেটা প্ল্যাটফর্মের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। নির্বাচনী তালিকা ডেটাবেস সিস্টেম আধার ইকোসিস্টেমে প্রবেশ করে না এবং সিস্টেমটি শুধুমাত্র প্রমাণীকরণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।

স্বতন্ত্র থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আইডিএফসি ইনস্টিটিউটের (IDFC Institute) একটি নোটে বলা হয়েছে, কমিশনের প্রস্তাব দু'টি ডেটাবেসের মধ্যে ডেটা শেয়ার করে নেওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে একটি শক্তিশালী ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা আইনের অনুপস্থিতিতে ডেটা শেয়ার করে নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার যে কোনও পদক্ষেপ সমস্যাযুক্ত হতে পারে। অনেকেই বলছেন আধার-ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণের সঠিক কারণগুলি এখনও স্পষ্ট নয়। সরকারের এই বিষয়ে কোনও সঠিক নীতি নেই। এছাডা়ও, বর্তমানে নির্বাচনী ডেটা ইসিআই-র নিজস্ব ডেটাবেসে থাকে, এর নিজস্ব যাচাইকরণ প্রক্রিয়া রয়েছে এবং অন্যান্য সরকারি ডেটাবেস থেকে আলাদা। আধার এবং নির্বাচনী ডেটাবেসের মধ্যে সংযোগ হলে কমিশন ও UIDAI-র কাছে তথ্য থাকবে। ফলে, এই তথ্যের অপব্যবহার হলে বড় সমস্যা হতে পারে।

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
EXPLAINED: কেন আধার নম্বরের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণ চায় নির্বাচন কমিশন?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল