হোম /খবর /Explained /
এই ৫ লক্ষণ দেখলেই পরামর্শ নিন চিকিৎসকের, ওমিক্রনের উপসর্গ হয় এরকমই!

Omicron Symptoms: এই ৫ লক্ষণ দেখলেই পরামর্শ নিন চিকিৎসকের, ওমিক্রনের উপসর্গ হয় এরকমই!

এই ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাধারণ মানুষের ওয়াকিবহাল থাকা জরুরি।

  • Share this:

#কলকাতা: যে কোনও ভাইরাল সংক্রমণের সবচেয়ে বিপদজ্জনক দিক হল সেটির তীব্রতা। একটি ভাইরাসের অতি সংক্রমণযোগ্যতার ভিত্তিতেই ভাইরাসজনিত কারণে মৃত্যুর হার নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আর যখন আলোচনার বিষয় কোভিড-১৯, তখন তো ভারত সহ সারা বিশ্ব ডেল্টা (Delta) ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহতা টের পেয়েছে।

এবার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে আরেক নতুন ভ্যারিয়ান্ট ওমিক্রন (Omicron)। ইতিমধ্যে করোনার এই নতুন প্রজাতি নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন সংস্থা নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণযোগ্যতাকেই নির্দেশ করেছে।

এর আগের ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট শুধু যে অত্যন্ত সংক্রামক ছিল তা নয়, একইসঙ্গে ডেল্টায় আক্রান্তের হালকা এবং গুরুতর জ্বর, ক্রমাগত কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, রক্তে অক্সিজেনের অভাবের মতো উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। ডেল্টায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছিলেন বহু মানুষ।

এখন করোনার নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট বিশ্বের সামনে নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা আগেরবারের চেয়ে ওমিক্রনের তীব্রতা, সংক্রমণের হার এবং উপসর্গে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। তবে ডেল্টার মতো ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে কি না তা নিয়ে আপাতত চিন্তায় রয়েছেন বিশ্বের চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।

আতঙ্কের বদলে যেহেতু সতর্কতাই এই ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই দিতে পারে, তাই এই ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাধারণ মানুষের ওয়াকিবহাল থাকা জরুরি।

এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনে দেখা যাচ্ছে হালকা উপসর্গ

নতুন এই স্ট্রেনের স্পাইক প্রোটিনে ৩০টিরও বেশি মিউটেশন রয়েছে, যা আগের অন্য স্ট্রেইনের মতো নয়। ফলে বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে মানুষের শরীরে ভ্যাকসিনের প্রতিরোধ ক্ষমতাতে এই ভাইরাস আটকানো যাবে না কাজ করবে না। যার জন্য এটি এত তাড়াতাড়ি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।

যদিও এখনও পর্যন্ত, সারা পৃথিবীতে ওমিক্রনে আক্রান্তদের শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পরামর্শ দেয় যে সার্স-কোভ-২-এর নতুন প্রজাতি সহজেই তাদেরকে আক্রমণ করছে যারা আগে এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন কিংবা টিকার দু'টি ডোজই নেওয়া গিয়েছে। তবে গ্লোবাল হেলথ এজেন্সির মতে ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনের হালকা প্রভাব থাকবে।

প্রাথমিকভাবে যখম ওমিক্রন প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় চিহ্নিত হয়, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন ড. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি (Dr Angelique Coetzee) যাঁর শরীরে প্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট দেখা গিয়েছিল, তিনি বলেছিলেন যে এই রোগটিতে উপসর্গ হালকা থাকবে এবং আক্রান্তদের শরীরে খুব বেশি লক্ষণ দেখা যাবে না।

এক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অথবা রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার মতো ঘটনা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। চিকিৎসকদের মতে, ওমিক্রনের কিছু লক্ষণ আছে যা অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যদিও আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি না হয়েই সুস্থ হয়ে ওঠার প্রমাণ রয়েছে৷ তাই ডাক্তার এবং বিজ্ঞানীরা এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ তালিকাভুক্ত করেছেন।

অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ হওয়া

আগের ভ্যারিয়ান্টের মতোই, কোভিডের ওমিক্রন প্রজাতিতে রোগীর ক্লান্তি বা চরম অবসাদের হতে পারে। ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে অতিরিক্ত ক্লান্ত বোধ হতে পারে, কোনও কাজের ক্ষেত্রে কম এনার্জি অনুভব করতে পারেন এবং সবসময় বিশ্রাম নেওয়ার ইচ্ছে থাকতে পারে, যা আক্রান্তের দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত করতে পারে।

ক্লান্তি অন্য কোনও কারণ এবং স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ক্লান্তির আসল কারণ নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই পরীক্ষা করে নেওয়া যাওয়া উচিত।

গলা ব্যথা বা গলা বসে যাওয়ার মতো সমস্যা

দক্ষিণ আফ্রিকার ডাক্তার, অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজির মতে, কিছু অস্বাভাবিক হলেও ওমিক্রনে সংক্রামিত ব্যক্তিরা গলা ব্যথার পরিবর্তে গলা বসে যাওয়ার মতো সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে গলা ব্যথা এবং গলা বসে যাওয়ার সমস্যা কিছুটা সমান মনে হতে পারে, তবে গলা ব্যথায় গলায় জ্বালার অনুভূত হয় এবং গলা বসে যাওয়া রোগীর পক্ষে আরও বেদনাদায়ক।

হালকা জ্বর যা এমনি চলে যায়

করোর প্রথম দিন থেকেই অর্থাৎ নভেল করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে, কোভিড-১৯ -এর অন্যতম লক্ষণ হিসাবে রোগীর শরীরে হালকা থেকে মাঝারি জ্বর দেখা গিয়েছে। তবে এর আগের স্ট্রেনের জ্বর রোগীদের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেললেও, ড. কোয়েটজির মতে, বর্তমান ভ্যারিয়ান্টে হালকা জ্বর হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি এবং যা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে।

রাতে ঘাম এবং গায়ে ব্যথা

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য দফতরের আরেকটি আপডেটে, আরেক ডাক্তার উনবেন পিলে (Unben Pilley) ওমিক্রনের আক্রান্তদের বেশ কিছু লক্ষণ অনুভব করে তালিকাভুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টের উপসর্গ হিসাবে যে রাতের ঘাম হওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা রাতেই হতে পারে।

আরও পড়ুন- বিরাট বনাম সৌরভ লড়াই নিয়ে এবার বড় বয়ান কপিল দেবের ! জানুন

রাতের এই ঘাম এতটাই বেশি হয় যে শুয়ে থাকার সময় রোগীর জামাকাপড় এবং বিছানার চাদর ভিজে যায়। পাশাপাশি ডাক্তারদের মতে, অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তদের গায়ে খুব ব্যথাও অনুভূত হয়।

শুকনো কাশি

এছাড়াও ডাক্তারদের পরামর্শ যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে শুকনো কাশি হতে পারে। যদিও এটি আগের অন্যান্য স্ট্রেনেও একইভাবে খুবই সাধারণ লক্ষণ ছিল। শুষ্ক কাশি হল যখন রোগী শ্বাসনালীতে গলার কোনও জ্বালা দূর করতে জোর করে শব্দ বের করেন। এক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে রোগীর অস্বস্তি বোধ হয়।

আগের ভ্যারিয়ান্টের লক্ষণের চেয়ে ওমিক্রনে কী পরিবর্তন হয়েছে

এখনও পর্যন্ত পাওয়া প্রমাণ অনুযায়ী নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট শুধু হালকা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে৷ তবে আগের ভ্যারিয়ান্টের লক্ষণের চেয়ে এক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যেমন ওমিক্রনে গন্ধ এবং স্বাদ চলে যাওয়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকী এর আগে কোভিডে আক্রান্ত হলে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যাওয়া বেশ চিন্তার কারণ ছিল। কিন্তু ওমিক্রনে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ঘটনা চোখে পড়েনি।

আরও পড়ুন- ব্যাটসম্যান বিরাট ব্যর্থ হলে হারাবেন টেস্ট অধিনায়কত্ব, বলছেন দানিশ

একই সঙ্গে আক্রান্তদের মধ্যে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংবা খুব বেশি তাপমাত্রার জ্বরও দেখা যায়নি। তবে পরীক্ষা না করলে উপসর্গ ,নাক্ত করা যাবে না। যদিও এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনে হালকা উপসর্গই দেখা গিয়েছে কিন্তু আগামী দিনে কোনও রকম বাড়াবাড়ি যাতে না হয় তাই প্রাথমিক অবস্থাতে ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে আসা জরুরি। সেক্ষেত্রে কোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

Published by:Suman Majumder
First published:

Tags: Corona symptoms, Coronavirs, COVID-19, Omicron