আরও পড়ুন: নো-কস্ট বললেও ইএমআই-এর বিজ্ঞাপনের আড়ালেই লুকনো রয়েছে চার্জ, বিষয়টি ঠিক কী?
সাইবার প্রতারণার পরিসর
যদি হ্যাকারদের হাতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যায় তবে খুব সহজেই তারা আমাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে পারে। সাইবার প্রতারণার (Cyber Fraud) শিকার হয়ে আমরা অনেকেই খুব অসহায় অনুভব করি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা চুরি বা আর্থিক প্রতারণার শিকার হলেও অনেকেই কোনও পদক্ষেপ করতে পারেন না। সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে আমাদের মনে একটা সঙ্কোচ এবং লজ্জার ভাব চলে আসে। আমাদের মধ্যেই এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা ছোট-বড় সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন কিন্তু বিষয়টি কাউকে জানাননি। সবাই মনে করেন এই পরিস্থিতিতে করণীয় কিছুই থাকে না। কিন্তু আসলে তা একেবারেই নয়। বাকি সমস্ত অপরাধের মতো এক্ষেত্রেও আইন রয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে আমরা আমাদের অনলাইন লেনদেনে চুরি হয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পেতে পারি।
advertisement
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অননুমোদিত এবং অবৈধ লেনদেনকে বলা হয় সাইবার প্রতারণা, অনলাইন প্রতারণা (Online Fraud) বা ডিজিটাল প্রতারণা (Digital Fraud)। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) গাইডলাইন অনুযায়ী উপরোক্ত যে কোনও ভাবে প্রতারিত হলে সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত পাওয়া যায়। তাছাড়া, এই ধরণের জালিয়াতির তথ্য শীঘ্রই মানুষকে জানানো উচিত যাতে তারা এজাতীয় প্রতারণা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রতি মাসে আয় হবে লাখ লাখ টাকা, জেনে নিন ডিম বিক্রি থেকে আয়ের খুঁটিনাটি!
বিমা নীতি কী ভাবে কাজ করে?
অনলাইন লেনদেনে প্রতারণার ক্ষেত্রে সব ব্যাঙ্কেরই বীমা নীতি (Insurance Policy) রয়েছে। অননুমোদিত লেনদেনের ব্যাপারে ব্যাঙ্ককে জানানো হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কের তরফে প্রতারণা বিষয়ক সমস্ত তথ্য বিমা কোম্পানির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিমা কোম্পানির টাকার সহায়তায় ব্যাঙ্ক আমাদের চুরি হয়ে যাওয়া অর্থের ক্ষতিপূরণ দেবে। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে টাকা চুরির হয়ে যাওয়ার পর ব্যাঙ্কের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সময়সীমা হল ৩ দিন। ৩ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্ককে জানালে আমাদের কোনও দায়ভার থাকে না এবং আমরা চুরি যাওয়া অর্থের সম্পূর্ণটাই ফেরত পেতে পারি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অননুমোদিত লেনদেনের বিষয় ব্যাঙ্ককে জানানো হলে ১০ দিনের মধ্যে আমাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত পাওয়া যায়। কিন্তু যদি আমরা ৩ দিনের মধ্যে অবৈধ অনলাইন লেনদেনে প্রতারণার বিষয়ে ব্যাঙ্ককে জানাতে ব্যর্থ হই, তবে তার কিছুটা দায় আমাদের বইতে হবে। আমরা যদি ৪ থেকে ৭ দিনের মাথায় ব্যাঙ্কে আবেদন করি, তবে আমাদের ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে। অর্থাৎ, বিমা কোম্পানি আমাদের চুরি হয়ে যাওয়া টাকার অঙ্কের থেকে ২৫,০০০ টাকা কম ক্ষতিপূরণ দেবে।
RBI-এর বিশেষ পদক্ষেপ
মুক্তি দিতে টোকেনাইজেশন (Tokenisation) প্রযুক্তি নিয়ে এল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। এতদিন পর্যন্ত যাঁরা শুধুমাত্র স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট ব্যবহার করতেন তাঁরাই টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু এবার থেকে ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ ব্য়বহারকারীরাও এর সুবিধা পাবেন। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ার ফলে অনলাইন লেনদেন অনেক সুরক্ষিত থাকবে। কারণ হিসেবে তাঁরা জানিয়েছেন, পেমেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তা ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করবে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর নির্দিষ্ট অ্যাপে সাবমিট করলে তবেই পেমেন্ট কনফার্ম হবে। ফলে জালিয়াতি অনেকটা কমবে।