বৃদ্ধ দম্পতি শুভা দাস মল্লিক এবং সদন দাস মল্লিক জানালেন তাঁদের অনুভূতির কথা। তাঁদের মেয়ে এই ছবির সম্পাদনা অর্থাৎ এডিটিং করেছেন। অনেকে মিলে এডিট করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রটি। সেই তালিকায় রয়েছেন বাঙালি কন্যে। তাঁদের কথায়, ‘‘অস্কার জেতা বিশাল বড় ব্যাপার। আমরা ভাবতেই পারিনি যে সঞ্চারী যেই ছবির সঙ্গে যুক্ত, সেটি অস্কার পেতে পারে! ছবিটি মনোনীত হওয়ার খবরেই খুশি ছিলাম আমরা। সেটিই আমাদের কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি। তার পর এই জয়। সকাল ৭টা নাগাদ ওকে মেসেজ করেছিলাম। তার পর দুপুরে মেয়ের সঙ্গে কথা হল। সঞ্চারী যে কী খুশি! কিন্তু একইসঙ্গে আমাকে নিয়ে অভিযোগ, কেন আগে ওকে শুভেচ্ছা জানাইনি, তাই জন্য।’’
advertisement
আরও পড়ুন: ফের অস্কার এল ভারতে, পুরস্কৃত হল স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’
শুভা দাস মল্লিকের কথায় জানা গেল, মেয়ের ফোনে অগুন্তি মেসেজ এসে চলেছে। ওঁরা অনেক আগেই লস অ্যাঞ্জেলসে চলে গিয়েছিলেন। প্রথম থেকেই মনে হচ্ছিল, জিতে জেতে পারেন। মা বললেন, ‘‘মেয়ে ২০২১ সাল থেকে এই ছবিটার এডিটিং শুরু করেছে। সেই সময়ে ও গোয়াতে ছিল। এটাই ওর প্রথম তথ্যচিত্র। যদিও এর আগে আমার বানানো তথ্যচিত্র এডিট করেছে। তা ছাড়া বিভিন্ন বিজ্ঞাপন এবং পূর্ণদৈর্ঘের ছবি এডিট করতে দেখেছি ওকে। খুবই পরিশ্রমী।’’
নভেম্বরে কলকাতা ফিরে মা-বাবাকে বলেছিলেন, ছবিটির এডিট খুব ভাল হচ্ছে। ফাইনাল টাচ দিয়েছেন সঞ্চারীর সিনিয়র ডগলাস ব্লাশ। নিউইয়র্ক ফেস্টিভ্যালে দেখানো হবে বলেও জানিয়েছিলেন মা-বাবাকে। মায়ের কথায়, ‘‘সত্যজিৎ রায়ের পর বাংলা আবার অস্কার পেল। যদিওমেয়ে কেবল এডিট করেছে, তাও সত্যজিৎ রায়ের পর আমাদের মেয়ের নাম আসবে, এটা ভেবেও তো ভাল লাগে।’’
আরও পড়ুন: 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স'-এর অস্কারজয়, ঘরে বসেই কোথায় দেখবেন এই তথ্যচিত্র? দারুণ চমক
সঞ্চারীর মা, শুভা দাস মল্লিক একজন অধ্যাপক। সেন্ট জেভিয়ার্স ইনস্টিটিউটে তিনি মাস কমিউনিকেশন পড়িয়েছিলেন ১৯৯৯ এবং ২০০০ সালের ব্যাচের ছাত্রছাত্রীকে। সঞ্চারীর দাদু আবার ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির একজন প্রতিষ্ঠাতা। যেই তালিকায় নাম রয়েছে স্ময়ং সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র পরিবারেই জন্ম বলা যেতে পারে। আজ গল্ফ গ্রিনের বাড়িতে উদযাপন চলছে। মেয়ের বন্ধুবান্ধব এসেছেন।
ওদিকে সেরা ফিচার তথ্যচিত্র বিভাগে মনোনীত হয়েছিল আর এক বাঙালি সন্তানের ছবি। কিন্তু শেষ পর্যায়ে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হল শৌনক সেনকে। বাঙালিরা রুদ্ধাশ্বাসে তাকিয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলসের এই অনুষ্ঠানের দিকে। বাংলার ঘরে কি এবার অস্কার আসবে? কিন্তু শৌনকের তথ্যচিত্র ‘অল দ্যাট ব্রিদস’-এর বদলে পুরস্কার নিয়ে গেল ‘নাভালনি’। তবে সেই মন খারাপে মলম সঞ্চারীর।