যে সমস্ত দুর্গা প্রতিদিনের জীবন যুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের পায়ের মাটি শক্ত করেছেন, হয়েছেন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। পুরুষতন্ত্রের চোখরাঙানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাঁরা নজির তৈরি করেছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ হয়তো আজ বিখ্যাত ফুচকাওয়ালা। কেউ আবার হয়তো কলকাতার নামী ক্যাফের মালকিন। কিন্তু যুদ্ধটা কোথাও যেন একই ছিল।
advertisement
আর এই সমস্ত উমাদের মুখ এবার ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ঋতুপর্ণার মতে, প্রত্যেক নারী কোথাও না কোথাও শক্তির প্রতীক। আমাদের সকলের মধ্যেই একজন করে উমা আছেন | আমি নিজের দীর্ঘ লড়াইয়ের যাত্রাপথে আমার অন্তরের অন্তর্নিহিত শক্তি অনুভব করেছি| সেখানে সমাজের এই সমস্ত লড়াকু মহিলা বা উমাদের মুখ হতে পেরে আমি সত্যিই আপ্লুত। আমি জানি মেয়েরা চাইলে যে কোনও লড়াইয়ে জয়লাভ করতে পারে। সেই সমস্ত জীবনের লড়াইয়ে জয়ী উমাদের নিয়ে আমাদের এই নব যাত্রা।'
মর্ত্যের উমাদের নিয়ে এই বিশেষ উদ্যোগে ঋতুপর্ণার পাশে রয়েছেন অভিনেত্রী দেবযানী চট্টোপাধ্যায়ও। দেবযানী মনে করেন, ঘরে, বাইরে সর্বত্র লড়াইটা থাকে। প্রত্যেককে নিজের মতো করে লড়তে হয়। তিনি নিজেও আজ অভিনয় জগতে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নিজের যে একটা জায়গা প্রতিষ্ঠা করেছেন তার পিছনেও ছিল দীর্ঘদিনের সংগ্রাম। কিন্তু তিনি কখনও কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাঁর যাত্রাপথ শুরু করেননি। জীবনে যদি প্রতিকূল পরিস্থিতি না থাকে এবং সেই সব প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে যদি জয়ের আনন্দ না থাকে| তাহলে সেই জীবন যথার্থ। অভিনেত্রীর দাবি, ''ভয়কে জয় করে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের মতো উমাদের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত।"
আরও পড়ুন: 'গীতবিতানের দিব্যি তোমায় ভীষণ ভালবাসি', কলকাতা চলন্তিকার প্রথম গান প্রকাশ্যে
সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে যে সমস্ত উমাদের বাছাই করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে এক জন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়। স্বরলিপি অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে নিজের কেরিয়ার শুরু করলেও এখন কলকাতার একটি নামী ক্যাফের মালিক। সেইসঙ্গে স্বরলিপি সিঙ্গেল মাদারও। এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে তাঁকেও এক জন উমা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। স্বরলিপি বললেন, ''একটা সময় কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে> অভিনয় ছেড়ে নিজের একটা ব্যবসা শুরু করেছিলাম। সেটা যখন আমার পরিচয় হতে শুরু করল সেই সময়ে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এতদিনের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা। একদিকে কাজের জন্য দিনরাত পরিশ্রম| অন্যদিকে, বাচ্চাকে ঠিক মতো সময় দিতে না পারা। সব মিলিয়ে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছি এবং প্রমাণ করেছি আমরা চাইলে অর্ধেক আকাশ হতে পারি।"
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং অন্যান্য বিশিষ্ট মানুষ মিলে আগামী মাসের ১৬ তারিখে দুবাইয়ে এক জমজমাট অনুষ্ঠানের মধ্যে থেকে বেছে নেবেন সব উমাদের মধ্যে থেকে বেছে নেবেন একজন বিশিষ্ট উমাকে। দেবী আসবে বলে তৈরি হবেন মর্ত্যের উমারা।