আপাতদৃষ্টিতে দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও ময়নাতদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য! সেই খুনের তদন্ত করতেই অনির্বাণের জীবনে প্রবেশ করেন অফিসার ইন চার্জ রজত। কারণ যে ছেলেটি খুন হয়েছে, সে আদতে অনির্বাণেরই প্রাক্তন ছাত্র। সেই খুনের তদন্ত করতে করতেই অনির্বাণের কাছে তিন্নির কথা জানতে পারেন রজত। এদিকে তিন্নির বাড়িতে গিয়ে চমকে ওঠেন রজত। কারণ ছোট্ট শিশুটি জানায় যে, সে না কি তার অনি আঙ্কেলের রেফ্রিজারেটরে একটা কাটা কান দেখতে পেয়েছে। জানা যায় যে, তিন্নিকে একটা পুতুল বানিয়ে দেবেন বলে অনির্বাণ সিলিকনের তৈরি হিউম্যান বডি পার্টস কিনে এনেছেন। এতে রজতের সন্দেহ আরও দৃঢ় হতে থাকে।
advertisement
সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রজত তিন্নির পুতুলটা দেখে তার একটি কান ছিঁড়ে সেটা ফরেন্সিকে পাঠান। কারণ এর কিছু দিন আগেই পুলিশ একটি মেয়ের মৃতদেহ জলাশয় থেকে উদ্ধার করেছিল, যাঁর কান, ঠোঁট এবং হাতের আঙুল নিপুণ ভাবে কাটা ছিল। এরপর সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে অনির্বাণের বাড়ি পৌঁছে যান রজত। রজত এসিপি-র কাছে জানান যে, তিনি অনির্বাণের বাড়ি সার্চ করতে চান, কারণ তিনি নিশ্চিত যে, অনির্বাণ কিছু লুকোচ্ছেন। নাহলে কেউ হিউম্যান বডি পার্টস দিয়ে বাচ্চার জন্য পুতুল কেন বানাবেন? রহস্যময় এই বাড়িতে কি লুকোনো আছে? প্রফেসর অনির্বাণ কি সত্যিই এই খুনের ব্যাপারে কিছু জানেন? এই সমস্ত প্রশ্নই ঘুরপাক খেতে থাকে। আর এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে দেখতেই হবে হাড়-হিম করা থ্রিলার ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’।
অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিত জানান, ‘‘ আপাতত ট্রেলারের প্রতিক্রিয়াই পাচ্ছি। বেশিরভাগ মানুষই ট্রেলারে আমার উপস্থিতি দেখে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যেটুকু দেখেছেন, সেটুকুই নাকি খুব ভাল লেগেছে। আমি যখন ট্রেলারের অংশ স্টোরিতে শেয়ার করেছিলাম, তখনও প্রচুর লাভ রিঅ্যাক্ট এসেছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এই ট্রেলার লঞ্চ খুবই স্পেশাল ছিল। যাঁদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি, যাঁদেরকে আগে টিভি কিংবা ওটিটি-তে দেখতাম, সেই শিল্পীদের পাশে বসে নিজের কাজ বড় পর্দায় দেখতে পাওয়া—একটা সত্যিই থ্রিলিং অভিজ্ঞতা ছিল। এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া।’’
সিরিজের মুখ্য চরিত্র অভিনেতা জয় সেনগুপ্ত জানান, ‘‘ট্রেলার লঞ্চে অসাধারণ সাড়া মিলেছে—মিডিয়া বন্ধুদের থেকে শুরু করে দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও ছিল ভীষণ ইতিবাচক। অনেকদিন পর সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হওয়াটা দারুণ আনন্দের ছিল। ‘দ্য ফ্ল্যামবয়েন্ট’-এ একসঙ্গে বসে ট্রেলার দেখা আমাদের সেই ব্যস্ত, কঠিন শ্যুটিং দিনের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্নরকম আবহাওয়া ও জায়গায় ছুটে ছুটে কাজ করার অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। লোকেশনগুলো ছিল মনোমুগ্ধকর, আবার খুবই নির্জন—যা শ্যুটিংকে যেমন আকর্ষণীয় করেছে, তেমনই আমাদের মধ্যে গভীর বন্ধন গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। প্রকৃতিকে যেন তার নিসর্গের সবচেয়ে একাকী অথচ অনন্য সৌন্দর্যে খুঁজে পেয়েছিলাম আমরা।’’
এই প্রসঙ্গে পরিচালক রাজদীপ ঘোষ বলেন যে, “যখন KLiKK প্রথম এই প্রজেক্ট নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমায় গল্পটি শোনায়, তখনই আমি বুঝতে পারি যে, এটি এমন একটি গল্প, যা নিয়ে আমি আগে কখনও কাজ করিনি। আমি সব সময়ই এই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেই সুযোগ আমার কাছে আসেনি। স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজনা ছিল অপরিসীম। এই সিরিজের জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় শ্যুটিং করেছি। যদিও আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি, তবে পুরো টিমের কঠোর পরিশ্রম আমাদের এই গল্পটিকে জীবন্ত করে তুলতে সাহায্য করেছে। দর্শকদের এটাই বলব যে, বিগত চার বছর ধরে KLiKK-এর এই নতুন ছন্দে সিরিজ পরিবেশনের মধ্যে এটা একটা উপহার। পাঁচ এপিসোডের সাইকোলোজিক্যাল থ্রিলার ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’। অসাধারণ অভিনয়, দুর্দান্ত সিনেমাটোগ্রাফি আর তার উপরে হৃদয়স্পর্শী মিউজিকাল ট্রিটমেন্ট।”
অভিনেত্রী অনুজা রায়ের কথায়, ‘‘আমি এই প্রজেক্টে কাজ করছি—একটা নামী এবং বড় প্ল্যাটফর্মে—এটা জেনে আমার বন্ধু ও পরিবার অত্যন্ত খুশি। ওরা সবাই ভীষণ এক্সসাইটেড ৷ প্রজেক্টে সই করার পর থেকেই আমি এই লঞ্চের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলাম। এত সুন্দর ও ট্যালেন্টেড একটা টিমের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্যিই দারুণ ছিল। অনেকদিন পর সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হয়ে খুব ভাল লেগেছে ৷’’
অভিনেতা জিৎসুন্দর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘পোস্টার এবং ট্রেলারে ঘাটশিলা ও উত্তরবঙ্গের মনোরম দৃশ্যপট যেভাবে ফুটে উঠেছে, তা সবাই বেশ পছন্দ করেছেন। গত বছর আমরা এই সিরিজের শ্যুট করেছিলাম। আবার কাস্ট ও ক্রুর সঙ্গে দেখা হওয়াটা ভীষণ ভাল লেগেছে। শিডিউলটা নিঃসন্দেহে কঠিন ছিল, কিন্তু আজ যখন চূড়ান্ত রেজাল্ট দেখি, তখন মনে হয়—সব পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন যে, “KLiKK-এর সঙ্গে এটা আমার চতুর্থ কাজ হলেও জয় সেনগুপ্ত, জয়জিৎ, দীপান্বিতা, জিৎসুন্দর – এঁদের সকলের সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। আর প্রথম কাজ হলেও শ্যুটিং ফ্লোরে সেটা আমি কখনওই টের পাইনি। আমাদের ইদানীং খুবই কম সময়ের মধ্যেই শুটিং শেষ করতে হয়। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কারণ তাঁরা প্রত্যেকেই এই ইন্ডাস্ট্রিতে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। আমার গাইডেন্স মেনে তাঁরা অসাধারণ অভিনয় করেছেন। আর তার ফলাফল সিরিজ মুক্তি পেলেই আপনারা দেখতে পাবেন।”
অভিনেতা জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দর্শক এবং বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া খুবই ইতিবাচক এসেছে, যা বরাবরের মতোই অনুপ্রেরণাদায়ক। দ্য ফ্ল্যামবয়েন্ট-এ ট্রেলারের যেভাবে আয়োজন করা হয়েছিল, আমরা পুরো টিম তা খুব উপভোগ করেছি। এখন যেহেতু সিরিজটি মুক্তির জন্য প্রস্তুত, আমাদের বিনোদন দেওয়ার প্রয়াস সফল হবে বলেই বিশ্বাস করি। ট্রেলার রিলিজের সময় যখন আমাদের আউটডোর শ্যুটের কিছু ঝলক দেখলাম, তখন অনেক পুরনো স্মৃতি ফিরে এল। বিশেষ করে একটা দৃশ্য ছিল—জঙ্গলের মধ্যে যেখানে আমি খুনের অস্ত্র আর রক্তের নমুনা খুঁজে পাই। সেই দৃশ্যের শুটিংয়ের সময়, আমার হাতের ওপর একটা জোঁক রক্ত চুষছিল, কিন্তু তখন আমি সেটা টের পাইনি! পরে এক স্থানীয় ড্রাইভারের সাহায্যে ওটা বের হয়। তাই বলতে পারি, শুধু অভিনয় আর ঘাম নয়—এই প্রজেক্টের জন্য আমি রক্তও দিয়েছি !’’