ছোটবেলা থেকেই সত্যজিৎ রায়ের কাজের প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল অনুপর্ণার। বাড়িতে বিয়ের জন্য বাবা-মা প্রবল চাপ সৃষ্টি করলেও অনুপর্ণা তাঁর বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল। আশ্চর্যের বিষয় অনুপর্না একের পর এক, একাধিক চাকরি ছেড়েছেন জীবনে, শুধুমাত্র চলচ্চিত্রের ভালবাসার টানেই।
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
advertisement
অনুপর্ণার বাবা ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত প্রোডাকশন ম্যানেজার ব্রহ্মানন্দ রায় এবং মা গৃহবধূ মনীষা রায়, দু’জনেই আনন্দে আপ্লুত। মেয়ের এই ঐতিহাসিক সাফল্যে গর্বে চোখ ভিজে এসেছে তাঁদের।
অনুপর্ণার বাবা ব্রহ্মানন্দ রায় বলেন, “মেয়ের এমন সাফল্যের খবর পেয়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। একসময় মনে হত, বারবার চাকরি ছেড়ে দিয়ে ও কি আদৌ কিছু করতে পারবে? কিন্তু আজ ওর এই জয় গোটা দেশকে গর্বিত করেছে। ও মাঝেমাঝে বলত, ‘আমি সত্যজিৎ রায়ের মত হতে না পারলেও, তাঁর ছায়াতল অবধি পৌঁছতে চাই।’ আজ মনে হচ্ছে ও সেটা পেরেছে।”
আরও পড়ুন৮২তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সেরা পরিচালক’ তিনিই! চিনে নিন পুরুলিয়ার ভূমিকন্যাকে
অনুপর্ণার মা মনীষা রায় বলেন, “মাঝরাতে মেয়ের ফোন, আর সেই ফোনেই জীবনের সবচেয়ে আনন্দের খবর! ও বলল, ‘মা, আমি পেরেছি।’ সেই রাতে আর ঘুমোতে পারিনি আনন্দে।”
অনুপর্ণা রায়ের পরিবার পুরুলিয়া জেলার নিতুড়িয়া ব্লকের নারায়ণপুর গ্রামের আদি বাসিন্দা। নিতুড়িয়ার রানিপুর কোলিয়ারি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন অনুপর্ণা। বাবার চাকরির বদলির কারণে পরে যান পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে। সেখানকার কলেজে ইংরেজি অনার্স করেন তিনি। এরপর মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করতে পাড়ি দেন নয়াদিল্লিতে, পরে মুম্বই। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর পেশাদার চলচ্চিত্রজীবনের যাত্রা। আজ সেই যাত্রা পৌঁছেছে বিশ্ব দরবারে।
ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের মত মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চে ভারতের পতাকা উড়িয়ে, অনুপর্ণা রায় প্রমাণ করে দিলেন, স্বপ্ন দেখলে, সাহস থাকলে, নিজের মাটির গন্ধ বুকের মধ্যে রাখলে, বিশ্বমঞ্চে পৌঁছান অসম্ভব নয়।
শান্তনু দাস