বিপ্র দাস, শিলিগুড়ি পুর কর্পোরেশনের অধীনে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগরের বাসিন্দা। তিনি তার বাবা, মা এবং তার দুই বোনের সঙ্গে থাকেন। তাঁর মা একজন গৃহিণী। এক বোনের বয়স ৫ বছর আর আরেক বোনের বয়স ৬ বছর। লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতে ভালবাসেন। এখন সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়।
advertisement
Check : পশ্চিমবঙ্গ এইচএস ক্লাস 12 তম ফলাফল 2023
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ, মেধাতালিকায় তুমুল চমক! দশম স্থানে অনুব্রত
বিপ্রর কথায়, “আমার বাবা-মা এবং শিক্ষকরা আমাকে আমার পড়াশোনায় সাহায্য করেছিলেন। আমি বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাই, কিন্তু এই ধারার জন্য খরচ অনেক বেশি। আর্থিক সমস্যার কারণে আমাকে বাণিজ্য বেছে নিতে হতে পারে। আমি এখনও কিছু সিদ্ধান্ত নেইনি।”
বিপ্রর বাবার বয়স ৫০ বছর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য তিনি। আগে তাঁর দর্জির দোকান ছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার জন্য দোকানটি বিক্রি করতে হয়েছে। পরে সবজি বিক্রি শুরু করেন। পরিবারের দাবি, এই সামান্য উপার্জনে সংসার ও লেখাপড়া একসঙ্গে প্রায় অসম্ভব তাঁদের পক্ষে। বিপ্রর বাবা বৈদ্যনাথ দাস বলেন, “বিপ্রর ফলাফলে আনন্দিত। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে আমি আর ওঁকে পড়াশোনা কতটা করাতে পারব জানি না। সরকার বা অন্য কেউ যদি আমাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করে, তাহলে ছেলে আরও পড়াশোনা করতে পারবে।”
অন্যদিকে, বিপ্রর মা শিল্পী দাস চোখে জল নিয়ে বলেন, “বিপ্র ছোট থেকেই মেধাবী। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত কোনও প্রাইভেট টিউটর ছিল না। পরে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক বিনামূল্যে প্রাইভেট কোচিং দিয়েছেন। বিপ্রর পাশাপাশি আমাদের দুই মেয়ে রয়েছে। তাদেরও প্রাইভেট টিউটর রাখতে পারিনি। আমাদের সত্যিই সাহায্যের প্রয়োজন।”
এদিকে, বরদাকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক সাইদুল হক জানিয়েছেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ বিপ্রকে তার পড়াশোনায় সহায়তা করবে। আমরা স্কুলের সকলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সবাই তাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত, যাতে সে বিজ্ঞান শাখায় নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।’
অনির্বাণ রায়