‘বীণা’-তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে গগনযান: ‘বীণা’-তে শিশুরা এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, গগনযান মিশন এবং ISRO-র গল্প পড়বে। এই পাঠ্যগুলি তাদের বলবে যে, ভারত কীভাবে মহাকাশে ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং প্রযুক্তিতে বিশ্বকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে। এই গল্পগুলি শিশুদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি উৎসাহ জাগিয়ে তুলবে এবং ভবিষ্যতের জন্য তাদের অনুপ্রাণিত করবে।
advertisement
শিশুরা গঙ্গা নদী সম্পর্কে জানতে পারবে: শিশুদের গঙ্গা নদীর সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হবে। এই বইটি তাদের হিমালয়ের গোমুখ থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত যাত্রায় নিয়ে যাবে। গঙ্গোত্রীর রুপোলি স্বচ্ছ জল থেকে শুরু করে শিশুরা শিখবে কীভাবে গঙ্গা দূষণের কারণে ঘোলা হয়ে যায়, যখন সে হরিদ্বারের কুম্ভমেলা এবং কাশীতে পৌঁছয়। এই পাঠে কেবল গঙ্গার পবিত্রতা সম্পর্কেই আলোচনা করা হবে না, পরিবেশ ও কৃষিকাজ রক্ষার জন্য জলের গুরুত্বও থাকবে।
মুরলীকান্তের গল্প: খেলাধুলো এবং দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়ে তোলার জন্য, ‘বীণা’-তে প্যারালিম্পিক সাঁতারু মুরলীকান্ত রাজারাম পেটকরের গল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে বুলেটের আঘাতের কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি হাল ছাড়েননি এবং ১৯৭২ সালের প্যারালিম্পিকে সাঁতারে ভারতের প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। এই গল্পটি শিশুদের শেখাবে যে, কঠোর পরিশ্রম এবং আবেগ থাকলে কোনও অসুবিধাই অসম্ভব নয়।
পঞ্চতন্ত্রের গল্পগুলি নীতিশাস্ত্র শেখাবে: ২৫০০ বছরের পুরনো পঞ্চতন্ত্রের গল্প, রাজা বিক্রমাদিত্য এবং রাজা ভোজের গল্পগুলি শিশুদের নীতি, প্রজ্ঞা এবং সংবেদনশীলতা শেখাবে। এই গল্পগুলি কেবল মজাদারই নয়, বরং শিশুদের সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য বুঝতেও সাহায্য করবে। উজ্জয়িনীর ঐতিহাসিক রাস্তা এবং রাজা বিক্রমাদিত্যের ন্যায়বিচারের সিংহাসনের গল্প শিশুদের আমাদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
হরিয়ানা থেকে অসম পর্যন্ত তথ্য: ‘বীণা’ শিশুদের ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং সংস্কৃতি ভ্রমণে নিয়ে যাবে। হরিয়ানায় গরুর দুধের গুরুত্ব, মণিপুরের লোকটাক হ্রদ, অসমের কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান এবং অরুণাচলপ্রদেশের বুদ্ধ পূর্ণিমায় পালিত সাদকেন উৎসবের গল্প শিশুদের ভারতের বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত করবে। এই পাঠ্যগুলি শিশুদের মধ্যে দেশের প্রতি ভালবাসা এবং ঐক্যের অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে।
অজন্তা-ইলোরাও ‘বীণা’-র অংশ: অজন্তা এবং ইলোরার ২০০০ বছরের পুরনো গুহাগুলিও ‘বীণা’-র অংশ। শিশুরা এই গুহাগুলির মন্দির, সুন্দর ভাস্কর্য এবং চিত্রকর্ম সম্পর্কে পড়তে পারবে। এই পাঠ্য তাদের ভারতীয় শিল্প, সংস্কৃতি এবং প্রকৌশলের গভীরতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে।
অনেক রাজ্যে বাস্তবায়িত হবে: NCERT জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) 2020-এর অধীনে ‘বীণা’ তৈরি করেছে, যা খেলাধুলো এবং কার্যকলাপের মাধ্যমে শেখার উপর জোর দেয়। এই বইটি ২০২৫-২৬ সেশন থেকে CBSE এবং অনেক রাজ্য বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ানো হবে। এটি কেবল শিশুদের শেখাবে না, বরং তাদের দেশের ঐতিহ্য সম্পর্কে চিন্তাভাবনা এবং তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগও দেবে। ‘বীণা’র গল্পগুলি শিশুদের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। এতে আধুনিকতা এবং ঐতিহ্যের এক চমৎকার সমন্বয় রয়েছে।