বোলপুর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন অষ্টম দলুই৷ বোলপুরের নেতাজি বাজারে একটি চায়ের দোকান চালিয়ে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে চলত সংসার৷ বড় মেয়ে মৌসুমি দলুই বোলপুর পারুলডাঙ্গা শিক্ষা নিকেতন আশ্রম বিদ্যাপীঠের ছাত্রী। ১৬ মার্চ ভোর ৪’টেয় সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় অষ্টম দলুইয়ের৷ সে দিনই ছিল মৌসুমির উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা৷ বাবার দেহ বাড়িতে রেখেই স্বপ্নপূরণ করতে কষ্ট বুকে চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েছিল পড়ুয়া। পরীক্ষা দিয়ে সোজা শ্মশানে গিয়ে বাবার মুখাগ্নিও করে। এরপর আর ৩টি পরীক্ষা দিয়েছিল।
advertisement
আরও পড়ুনঃ দুর্ঘটনায় আচমকা বাবার মৃত্যু, দেহ রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল, মাধ্যমিকে কত পেল কাশ্মীর?
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় এক বিয়ে ঘিরে তোলপাড়, মন্দিরে মালা বদল দু’জনের! পরিচয় জেনেই চমকাচ্ছে সকলে
বাড়ির বড় মেয়ের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাবার স্বপ্নপূরণের অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠেছিল মৌসুমি। ২৪ মে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়৷ ৩০৯ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে মৌসুমি৷ ৬১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। দারিদ্র্য ও পিতৃহারা মেয়ের এই ফলাফলে খুশি সকলেই।
মৌসুমি দলুই বলেন, ‘৩০৯ নম্বর পেয়েছি৷ বাবার এরকম না হলে ফল আরও একটু ভাল হত৷ ৪০০ থেকে ৪৫০ নম্বর পেতাম, এটাই আশা ছিল৷ মা এখন বাবার চায়ের দোকানটা চালায়৷ এটা থেকেই দিন চলে৷ পরবর্তী পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কেউ যদি সহযোগিতা করে খুব ভাল হয়। প্রতিকূলতা কাটিয়ে মৌসুমির এই ফলাফলে খুশি পারুলডাঙ্গা শিক্ষা নিকেতন আশ্রম বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার দাস। তিনি বলেন, “ওর সাফল্য গর্ব করার মতোই। যে মেয়ে বাবার মৃতদেহ রেখে পরীক্ষা দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে৷ তারপরেও আরও পরীক্ষা দিয়েছে। সে ফাস্ট ডিভিশনে পাশ করেছে এটা বিরাট ব্যাপার৷ আমরা খুবই খুশি৷ ও পড়াশোনায় ভাল। এই ঘটনা না ঘটলে আরও ভাল ফল করত।”
Subhadip Pal