সম্প্রতি, একাধিক অস্বাভাবিক ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কৃতি পড়ুয়াদের। স্বাভাবিকভাবে একের পর এক পড়ুয়ার মৃত্যুতে বেশ চিন্তার হয়ে দাঁড়িয়েছিল আইআইটি কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রতিষ্ঠানের নবনিযুক্ত ডিরেক্টর তথা বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তীর কথায়, “জীবনের মূল্য সবথেকে বেশি। এর কোনও বিকল্প হয়না। আমি নিজেও একজন পিতা। তারপর একজন অধিকর্তা (ডিরেক্টর)। আমি কখনওই চাইবনা, একজন অভিভাবকও তাঁর সন্তানকে হারাক!” গত ২৩ জুন (২০২৫) দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, “আগামী এক বছরে এই প্রতিষ্ঠানের একজন পড়ুয়ারও যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু না হয়, সেটাই হবে আমার সবথেকে বড় সাফল্য!” সেই লক্ষ্যেই তিনি অবিচল। অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী জানান, “প্রযুক্তি বা কড়া নিরাপত্তা দিয়ে সবকিছু হয়না। প্রযুক্তির সঙ্গে মানবপ্রেম বা হিউম্যান টাচ প্রয়োজন। এআই (AI)-র সঙ্গে মিশবে মায়ের ভালোবাসা। তবেই ওদের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছন সম্ভব।”
advertisement
ইতিমধ্যেই, পড়ুয়াদের আবাসন বা হোস্টেল (হল) গুলিতেও পরিদর্শন শুরু করেছেন নবনিযুক্ত ডিরেক্টর। হঠাৎ করেই বিভিন্ন রুমে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। কথা বলেন পড়ুয়াদের সঙ্গে। ঘুরে দেখেন তাঁদের রুম, খাওয়া-দাওয়ার জায়গা। পড়ুয়াদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে ফিরে আসেন তিনি। এভাবেই অন্যান্য হলগুলিতেও সারপ্রাইজ ভিজিট বা হঠাৎ পরিদর্শন করবেন বলে সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন ডিরেক্টর। তাঁর কথায়, “এই পরিদর্শন অবশ্যই ডিরেক্টর বা অধিকর্তা হিসেবে নয়। এবার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অধ্যাপক, অধ্যাপিকাদের কিংবা ছাত্র-ছাত্রীদের এক স্নেহের বন্ধন গড়ে তোলার জন্য নতুন এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আইআইটি খড়্গপুরের তরফে। ডিরেক্টরের কথায়, “এই সেতু-বন্ধনটারই তো প্রয়োজন। সেজন্যই পড়ুয়াদের জন্য আমরা নিয়ে আসছি নতুন অ্যাপ ‘SETU’ (Support, Empathy, Transformation & Upliftment)।”
জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ উদ্বোধিত হতে পারে। ‘Scientifically designed, Technologically enabled, Culturally rooted, Compassionately driven’—এই চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই অ্যাপটি ছাত্রদের সঙ্গে নিয়মিত কথোপকথন ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মানসিক সহায়তা এবং নজরদারি চালাবে। অ্যাপটির মাধ্যমে ছাত্রদের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনে পরামর্শদাতা বা বিশেষজ্ঞদের সাহায্যও নেওয়া হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য শুধুমাত্র প্রযুক্তিনির্ভর নয়, বরং মানবিক সংযোগ ও সহানুভূতির মাধ্যমে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা।
রঞ্জন চন্দ