সরকারি মাধ্যম স্কুল হিসেবে হাওড়া জেলায় প্রথম এআই ব্যবহারে স্কুলে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে হাওড়া দেশবন্ধু বালিকা বিদ্যালয়ে। সাধারণ ডিজিটাল মাধ্যম থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে পঠন-পাঠন ত্রুটিহীন শিক্ষাদান বা শিক্ষাগ্রহণের পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণীর প্রত্যেক ছাত্র বা ছাত্রীর উপর নজরদারি অনেক সহজ। যার মাধ্যমে প্রতিটি ছাত্রছাত্রী কম সময়ে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব। শিক্ষক-ছাত্রের শিক্ষা গ্রহণ এবং শিক্ষাদানে যেমন সহজ মাধ্যম এটি। তেমনি অভিভাবক বা অভিভাবিকার নজরদারিও সম্ভব।
advertisement
উপস্থিতি বা রোল কল থেকে প্রতিটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করা। অন্যদিকে একটি প্রশ্নের উত্তরে একাধিক উত্তরের সুবিধা নিতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। যেখানে এক ঘর ছাত্রছাত্রী নজরদারি কঠিন হয়ে পড়ত। এই অ্যাপের মাধ্যমে অল্প সময়ে মূল্যায়ন করা সম্ভব। ক্লিকারের মাধ্যমে উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে কোন ছাত্র বা ছাত্রী একবার বা একাধিকবার উত্তর পরিবর্তন, এবং কে ভুল উত্তর প্রদান করেছে তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব।
খুব সহজেই গোটা ক্লাসরুমের ছাত্রছাত্রীর প্রশ্ন-উত্তর পর্ব খতিয়ে দেখা সম্ভব। হাওড়া সদর দক্ষিণ চক্রের অন্তর্গত হাওড়া দেশবন্ধু বালিকা বিদ্যালয়ে সূচনা হল এআই চালিত ক্লিকার ড্রাইভেন লার্নিং এন্ড অ্যাসেসমেন্ট অ্যাপ পাইলট প্রকল্প। শিক্ষা ব্যবস্থায় ডিজিটাল মাধ্যম আগেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বহু সরকারি বিদ্যালয়ে। এবার ডিজিটাল মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে উদ্যোগী রাজ্য স্কুলশিক্ষা বিভাগ। তারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্যে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে দশটি বিদ্যালয়ে ক্লিকার বেসড এআই চালিত স্মার্ট লার্নিং অ্যাপের মাধ্যমে শুরু হয়েছে পঠন-পাঠন। এই প্রজেক্টে নির্বাচিত বিদ্যালয়ের মধ্যে হাওড়ার একমাত্র বিদ্যালয় ‘হাওড়া দেশবন্ধু বালিকা বিদ্যালয়’ এই প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হয়।
এই প্রকল্পের মূল হল, শিক্ষার্থীদের শেখার অভিজ্ঞতা আরও আকর্ষণীয় ও ইন্টারেক্টিভ করা। এখানে মূলত ব্ল্যাকবোর্ডের পরিবর্তে একটি বড় স্ক্রিন রাখা হয়। শ্রেণিকক্ষে প্রতি ছাত্র বা ছাত্রীর হাতে একটি করে ক্লিকার থাকে যার মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এখানে কোন ছাত্র বা ছাত্রী বাদ পড়ে যাওয়ার মতো। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী এখানে অ্যাকটিভ পার্ট। সমস্ত ছাত্রছাত্রীর মতামত বা উত্তর প্রদান করলে তবেই ট্যাবটি ক্লোজ হবে। ফাঁকি দেওয়া বা বাদ পড়ে যাবার ব্যাপার থাকছে না।
এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সহজ। প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিটি ছাত্রীর দুর্বলতা এবং দক্ষতা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা সম্ভব বলেই জানান, হাওড়া দেশবন্ধু বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কুসুম ভট্টাচার্য। তিনি আরও জানান, এই অ্যাপে বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া সমস্ত বিষয়ে ফরম্যাট তৈরি রয়েছে অ্যাপের মধ্যে। ইংরেজি ও বাংলা বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজেরাই সেটআপ করতে পারেন।
এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে পঠন-পাঠন ছাত্রী এবং শিক্ষিকা উভয়ের দারুণ আগ্রহ। এই এআই-বেসড পদ্ধতিতে পঠন-পাঠন সময়ের আগেই সিলেবাস শেষ হয়ে যাবার মতোই বলে মনে করছে হাওড়ার এই স্কুল। এই অ্যাপে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর আলাদা লগইন আইডি। প্রতিটি ক্লাসের পড়ানোর বিষয়বস্তু এবং ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি সমস্ত তথ্য সেভ থাকবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে একটি ‘জিনি’ ট্যাব রয়েছে যেটি বিভিন্ন তথ্য প্রদানের সহযোগিতা করে। অ্যাপের মাধ্যমে সম্পূর্ণ তথ্য দেখতে পারেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা।
রাকেশ মাইতি