আধুনিক সভ্যতার প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে বেশ কিছু গ্রামীণ পরিবার হারাতে বসেছে বাঁশের তৈরি শিল্পের নান্দনিক ব্যবহার। বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা দিন দিন ক্রমশ কমেই যাচ্ছে।
কদর না থাকায় গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরী বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় আকর্ষনীয় আসবাবপত্র। অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগররা দীর্ঘদিনের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশার দিকে ছুটছে।তবে, শত অভাব অনটনের মাঝেও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কিছু গ্রামের হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার আজও পৈতৃক এই পেশাটি ধরে রেখেছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: রেল লাইনে হাতিকে দেখতে পেয়েই ট্রেন থামালেন চালক! তারপর? ঘটল মন ভাল করা ঘটনা
আরও পড়ুন: শৈলশহর মেঘের আড়ালে, কালিম্পং ঝলমলে, সমতলে বাড়ছে অস্বস্তিকর গরম
জানা গিয়েছে, বাঁশ, প্লাস্টিকের ফিতা ও পেরেক দিয়ে দোলনা-সহ চেয়ার, বুকসেলফ, মোড়া সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি করা হয়। প্রতি মাসে গড়ে তৈরি ২০০-২৫০টি দোলনা বানানো হয় এখানে। বিভিন্ন আসবাবপত্র আকারভেদে বিক্রি হয় ৩০০-৩৫০০ টাকায়।
বাড়িতে তৈরি করা দোলনা সহ বাঁশের আসবাবপত্র গুলি নিজস্ব জেলার পাশাপাশি মালদা, উত্তর দিনাজপুর, শিলিগুড়ি সহ কয়েকটি জেলায় বাজারজাত করেন তারা। এমনকি পাইকারি দরেও বাড়ি থেকে নিয়ে যায় অনেক হকার।
বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বাঁশের তৈরি মনমুগ্ধ বিভিন্ন জিনিসের জায়গা করে নিয়েছে স্বল্প দামের প্লাষ্টিকের তৈরি পন্য। তাই বাঁশের তৈরি মনমুগ্ধকর সেইসব পন্য এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে।
বিশ্ব জুড়ে মেশিন দিয়ে তৈরি অত্যাধুনিক মানের রকমারি আসবাবের কাছে, হাতে তৈরি করা শিল্পের টিকে থাকা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। যদিও যান্ত্রিকতার যুগে নিজের কাজের দক্ষতা এবং জীবিকার টানাপড়েনে অনিশ্চিত হয়ে উঠছে এই শিল্পীদের ভবিষ্যত।
তারা বছরের পর বছর দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও মেলেনি কোনও রকম সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা।সরকার থেকে মিলেছে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি।
সরকারিভাবে কোনো সুযোগ সুবিধা পেলে আবারও ফিরে আসতে পারবে নিজস্ব শিল্পে। বৃদ্ধি পাবে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য বাঁশের তৈরি হস্ত ও কুঠিরশিল্পের কাজ, এমনটাই সবার আশা বলে জানা গেছে।
সুস্মিতা গোস্বামী