জেলাশাসক বুধবার বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। এদিকে হঠাৎই ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু হয়েছে বালুরঘাট হাসপাতালে। অথচ দীর্ঘদিন এই পরিষেবা বন্ধ ছিল। রোগীরা সমস্যার মুখে পড়লেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিশেষ কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজ্যে আসবেন শুনেই রাতারাতি এই পরিষেবা চালু করা হলো?
advertisement
আরও পড়ুন: দলগাঁও শ্মশানের রাস্তা পাকা হবে, খুশি গ্রামের মানুষ
বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বালুরঘাট হাসপাতালে এসে ডায়ালিসিস ইউনিট ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি নতুন চালু হতে চলা সিসিইউ ইউনিট ও এমআরআই বিভাগও পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিএমওএইচ সুদীপ দাস, অতিরিক্ত জেলাশাসক বিবেক কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
২৬, ২৭ ও ২৮ মে এই তিনদিন জাতীয় প্রতিনিধি দল বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে এসে এখানকার পরিষেবা ও পরিকাঠামো খতিয়ে দেখবে। রেফার, রোগী পরিষেবা, ওয়ার্ডের পরিকাঠামো, স্বচ্ছতা সহ নানান বিষয়ে একেবারে খুঁটিয়ে নজরদারি চালানো হবে। পাশাপাশি রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলবে প্রতিনিধি দলটি। সবকিছু দেখে এই প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে। তার ভিত্তিতেই শংসাপত্র পাবে জেলা হাসপাতাল।
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের এই সফরের আগে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে এখন সাজো সাজো রব। তবে এরই মধ্যে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত দু’বছর ধরে সিসিইউ ইউনিট তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও তা চালু করা হয়নি। এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, পিপিপি মডেলে তৈরি হওয়ায় সিসিইউ ইউনিট চালু করার বিষয়টি পুরোপুরি হাসপাতালে নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসার খবর পেতেই রাতারাতি চালু করে দেওয়া হল ২৪ বেডের সিসিইউ ইউনিট। তবে বিতর্ক শুধু এখানেই থেমে নেই। প্রায় দু’বছর আগে উদ্বোধন হলেও এতদিন বালুরঘাট হাসপাতালে চালু করা যায়নি এমআরআই ইউনিট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, ওই মেশিন এখনও বালুরঘাটে এসে পৌঁছয়নি। আবার মেশিন এসে যাওয়ার পর হিলিয়াম গ্যাসের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছিল। চলতি মাসের প্রথমেই হিলিয়াম গ্যাসও বালুরঘাটে এসে পৌঁছয়। তা সত্ত্বেও এমআরআই চালু হয়নি জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসার খবর পৌঁছতেই রাতারাতি এমআরআই বিভাগ চালুর প্রস্তুতির সম্পূর্ণ। খুব শীঘ্রই এখানে রোগী পরিষেবা দেওয়া শুরু হবে।
সম্প্রতি স্বচ্ছতা ও অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সুশ্রী কায়াকল্পে রাজ্যসেরা হাসপাতালের তকমা পেয়েছে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল। এই শিরোপা জেতায় পুরস্কার স্বরূপ ৫০ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা হাসপাতালের। কিন্তু নানা সময় রেফার প্রবণতা, রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, চিকিৎসায় গাফিলতি, চিকিৎসকদের অনিয়মিত রোগী দেখা সহ নানা বিষয়ে ক্ষোভ রয়েছে জেলার মানুষের। এখন দেখার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধির দলের পরীক্ষায় এইসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে পাস করতে পারে কিনা।
সুস্মিতা গোস্বামী