সাময়িক ভাবে মনে হতেই পারে যে কোনও রূপকথার গল্পের নায়ক গাছবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু শিবা কোনও রূপকথার গল্পের চরিত্র নন। জানা যায় কিছু দিন আগে শিবা করোনায় আক্রান্ত হন। এর পরেই তোশক, বালিশ, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ির নিকটবর্তী একটি গাছে এই বাড়ি তৈরি করেন। কারণ গ্রামের স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁকে তাঁর পরিবার থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন, যেহেতু শিবার পুরো পরিবার একটি ছোট জায়গাতে বাস করে। ফলে এই ভাইরাস যাতে তাঁর পরিবারকে প্রভাবিত না করে, তাই যুবকটি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
advertisement
জানা যায় তাঁর গ্রাম নালাগোন্ডায় ৩৫০টি পরিবার থাকলেও বিপদে কিন্তু তাঁকে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। কারণ সকলেই করোনার ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। অন্য দিকে নিকটবর্তী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গ্রাম থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এবং হাসপাতালও ৩০ কিলোমিটার দূরে। বছর ১৮-র এই তরুণ পড়াশোনার সুবাদে হায়দরাবাদে থাকেন কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য কলেজগুলোও বন্ধ, ফলে শিবা বাড়ি ফিরে আসেন। যদিও সম্প্রতি ১৩ মে ওই জেলায় একটি কোভিড আইসোলেশন কেন্দ্র চালু হয়েছে, কিন্তু খুব কম লোকই এই সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
শিবা একা নন যিনি আলাদাভাবে থাকতে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর গ্রামে অনেকে বাথরুমে, অস্থায়ী কুঁড়েঘরে বিচ্ছিন্ন থাকা শুরু করেছেন এবং এর জন্য একই রকম পন্থা নিয়েছেন তাঁরা। উল্লেখ্য যে,গত বছর দেশব্যাপী লকডাউনের আগে পর্যন্ত পুরুলিয়া জেলার সাতজন আদিবাসী পরিযায়ী শ্রমিক কাজ থেকে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। তাঁরাও একই ভাবে নিজেদের অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে বট এবং দু'টি আমের গাছে আলাদা থাকার জায়গা তৈরি করেছিলেন। যেহেতু শ্রমিকদের পরিবারগুলি মাটির কুঁড়েঘরে বাস করত, তাই তাঁরা গাছের ডালে আলাদা ভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কারণ তাঁরা চাননি যে তাদের পরিবারের কেউ এই রোগে আক্রান্ত হন।
