গতবছর করোনার জেরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ (Higher Secondary)। তবে এ বছর সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় ফের পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা সংসদ। চলতি বছর জানানো হয়েছে, কোন বিদ্যালয় টোকাটুকি হলে, সেই বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক অনুমোদন বাতিল করা হবে। মূলত সুষ্ঠুভাবে ও পরিচ্ছন্ন ভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে এমন কড়া মনোভাব নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংক্রমণের কথা মাথায় রাখা হয়েছে।
advertisement
অন্যদিকে, প্রশ্নপত্র যাতে ফাঁস না হয়, তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলাতে আগামীকাল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (HS Exam Rule) নিয়ে জেলা প্রশাসন যথেষ্ট তৎপর। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন জেলায় রয়েছে উপনির্বাচন। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন আগামী ১২ এপ্রিল (Asansol Election)। পরীক্ষা চলাকালীন রয়েছে বাংলা নববর্ষ। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছরে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতে বেশ কয়েকটা দিন বাড়তি সময় লাগছে। চলতি বছরে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য মূল ভেন্যু রয়েছে ২২ টি (HS Venues)। যার মধ্যে আসানসোল সাব ডিভিশনে রয়েছে ১০ টি এবং দুর্গাপুর সাব ডিভিশনে রয়েছে ১২ টি। জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ১৮২ টি। যার মধ্যে ১০৮ টি রয়েছে আসানসোল সাব ডিভিশনে এবং ৭৪ টি দুর্গাপুর সাব ডিভিশনে। চলতি বছরে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ হাজার ৯৭৪ জন (Higher Secondary Student) । মাধ্যমিকের মত উচ্চ মাধ্যমিকেও জেলায় ছেলে পরীক্ষার্থীর থেকে মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। করোনাকালের পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকে ১১৯৪৬ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিকে বসছেন। ছেলে পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা ৯৮৪৮ জন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে মোবাইল ফোন অথবা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে ঢোকার ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব নেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারবেন না কোনও পরীক্ষার্থী। পরীক্ষকদেরও পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগে নিজেদের মোবাইল ফোন জমা রাখতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রেই পুলিশি নজরদারি থাকবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর থাকবে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে প্রশ্নপত্র যাতে ফাঁস না হয়, তার জন্য থাকবে পুলিশি নজরদারি। পরিচ্ছন্নভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে জানানো হয়েছে, টোকাটুকি হলে সেই কেন্দ্রের অনুমোদন বাতিল করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন কেন্দ্র করে নির্বাচন বিধি লাগু হয়ে গিয়েছে। চারিদিকে চলছে প্রচার। অন্যদিকে নির্বাচনের কাজের জন্য প্রশাসনিক কর্তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সরকারি কর্মচারীরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত যে সমস্ত থানাগুলি রয়েছে, সেখানকার পুলিশ কর্মীরাও ব্যস্ততার মধ্যে। তার পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা জেলা প্রশাসনের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। যার জন্য বিশেষভাবে তৎপর রয়েছে জেলা প্রশাসন।
অন্যদিকে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়া পরীক্ষার্থীরাও কিছুটা চিন্তিত রয়েছেন। কারণ করোনার জেরে অনলাইন ক্লাসের পর্ব মিটিয়ে তারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন। সিলেবাসের বেশিরভাগ অংশ অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়েছে। তাই পরীক্ষার্থীরা কিছুটা চিন্তিত। চিন্তিত তাদের অভিভাবকরাও। তবে বিশেষজ্ঞদের আশ্বাস, ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা হলে যেতে হবে। পরীক্ষা নিয়ে অহেতুক মনের মধ্যে ভয় ভীতি রাখলে চলবে না। তাহলে পরীক্ষা দিতে বসে ভয়ের কিছু থাকবে না। পরীক্ষা ভালোভাবে সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা অনেক বেড়ে যাবে।
Nayan Ghosh