নিউ টাউনের রোজডেল আবাসনের বাইরে একে একে এসে দাঁড়াচ্ছেন কিবু ভিকুনা, মারিও রিভেরারা। এই শহর থেকে সংসার পাতি গুটিয়ে নিজেদের দেশে ফেরার তোড়জোড়। ময়দানের রেষারেষির রং সরিয়ে আবাসনের বাইরে গল্পে মশগুল কোলাডো, বেইতিয়া রা। সঙ্গে স্ত্রী, পরিবার। একে অন্যকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন সব জিনিসপত্র ঠিকঠাক নেওয়া হয়েছে কী না।
advertisement
সব মিলিয়ে জনা বিশ। নিউটাউনের রোজডেল আবাসনের সামনে অপেক্ষায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পেল্লায় বাস। স্প্যানিশ সওয়ারি সঙ্গে নিয়ে আসানসোল হয়ে বাস ছুটল বেনারসের উদ্দেশ্যে। রবিবার সেখানেই রাত্রি বাস। সোমবার সেখান থেকেই সোজা দিল্লি বিমানবন্দর। ৫ মে রাত তিনটের বিশেষ উড়ানে আমস্টারডাম রওনা। যাওয়ার বেলায় মারিও কিংবা কিবু দুজনেই ফিরে ফিরে তাকাচ্ছিলেন শহরটার দিকে। হয়তো বা শহর ছাড়ার আগে শেষবার গায়ে মেখে নিতে চাইছিলেন ফুটবল নিয়ে কলকাতার চেনা আবেগ আর ভালবাসাটা।
শনিবার রাতেই মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বোস ও অর্থসচিব দেবাশিষ দত্ত সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে এসেছেন। বিদায়ী কোচ, ফুটবলারদের হাতে তুলে দিয়েছেন সবুজ-মেরুন উপহারের ডালি। ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী সংস্থা কোয়েসের পক্ষ থেকে নীলাঞ্জন চক্রবর্তী, অরিন্দম মিত্ররাও অতিথি বিদায়ে কার্পণ্য করেননি যাওয়ার বেলায়। লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার মারিও, কোলাডোদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন নিয়মিত।
এই শহরে ওরা আবারও ফিরবেন কী না, সময় বলবে। তবে অতিথি বিদায়ে আন্তরিকতায় কম পড়েনি তিলোত্তমার।
ভারত সেরা হয়েও এই শহরের সেলিব্রেশন দেখা হয়নি কিবুর। মারিওই বা সেই ভাবে সুযোগ পেলেন কোথায়! বাসের জানালায় বসা কিবু ভিকুনা, মারিও রিভেরার চোখগুলো যেন খুঁজে পেতে চাইছিল অপূর্ণ সেই আশ। সর্বনাশা করোনা শুধু কলকাতা নয়, বিশ্বের তাবড় দেশের থেকে কেড়ে নিয়েছে যে অতি সাধের ফুটবলকে!
PARADIP GHOSH
