আরও পড়ুন: সম্পত্তি কেনার আগে যে কাজটা অবশ্যই করতে হবে.....
এই সমস্যার একমাত্র এবং সব চেয়ে সহজ সমাধান হল-- দায়বদ্ধতা শংসাপত্র। যখন একটি সম্পত্তিকে বন্ধক রাখা হয় বা অন্য কোনও কিছু বন্ধক রেখে সম্পত্তিটি কেনা হয়, তখন ঋণদাতা ওই সম্পত্তির ওপর ‘লিয়েন’ নামে এক ধরনের চার্জ লাগিয়ে দেয়। এই চার্জের অর্থ হল, যত ক্ষণ না বন্ধকী পরিশোধ হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত মালিক তাঁর সম্পত্তি অন্য কোথাও বিক্রি করতে পারবেন না। দায়বদ্ধতা শংসাপত্রে উল্লেখ করা থাকে যে, কোনও একটি সম্পত্তির উপর ‘লিয়েন’ ধার্য করা হয়েছে কি না। সম্পত্তি ক্রয় করার আগে অবশ্যই নিশ্চিত করে নেওয়া উচিত যে, কোনও অতিরিক্ত দায় বা চার্জ রয়েছে কি না। শংসাপত্রে কোনও চার্জ না-থাকলে গ্রাহক নির্দ্বিধায় পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হতে পারেন। সম্পত্তি কোনও আইনি বা অর্থনৈতিক দায়ে ফেঁসে থাকলে সেই বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জেনে এবং সমস্ত দিক ভাবনা চিন্তা করে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা উচিত।
advertisement
আরও পড়ুন: আবাসন প্রকল্প রেরা তালিকাভুক্ত কি না, সেটা কী ভাবে বোঝা যাবে?
অনলাইন এবং অফলাইন-- দুই রকমের প্রক্রিয়া অবলম্বন করে দায়বদ্ধতা শংসাপত্র গ্রহণ করা যায়। দুই ক্ষেত্রেই আবেদন করার সময় আবেদনকারীকে উল্লেখ করে দিতে হয় যে, কত সাল থেকে কত সাল পর্যন্ত সময়সীমার জন্য এই শংসাপত্র প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত সময় কালের জন্য আবেদন করা হলে এই ৩০ বছর সময়ে একটি সম্পত্তি আইনি জটিলতায় আটকে রয়েছে কি না, শুধুমাত্র সেই তথ্য দেওয়া হবে। ১৯৮০ সালের আগে অথবা ২০১০ সালের পরের তথ্য দেওয়া হবে না। আবেদন করার সময় একটি ফি প্রদান করতে হয়, যা বিভিন্ন রাজ্যর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হয়। এ ছাড়া, সময়সীমার উপর ভিত্তি করেও ফি নির্ধারিত করা হয়। বেশির ভাগ রাজ্যেই এখনও অফলাইন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, এক জন উপভোক্তা সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে হাতে লিখে আবেদন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় তুলনামূলক বেশি সময় লাগে। আবেদনের ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে উপভোক্তা শংসাপত্র হাতে পাবেন।
আরও পড়ুন: গত ৩০ বছরে এই গ্রামে প্রবেশ করেনি কোনও পুরুষ, তা সত্ত্বেও গর্ভবতী হয়ে যান মহিলারা .....
অন্য দিকে, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, কেরল, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু এবং তেলঙ্গানার মতো হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্যে দায়বদ্ধতা শংসাপত্র অনলাইনে তোলার পরিষেবা রয়েছে। রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কোনও সম্পত্তির শংসাপত্রের জন্য আবেদন করা যায়। এই প্রক্রিয়া অফলাইনের তুলনায় অনেক দ্রুত এবং ২-৩ দিনের মধ্যে আবেদনকারী শংসাপত্রের কপি পেয়ে যেতে পারেন।
দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের জন্য অনলাইনে কী ভাবে আবেদন করা যায়?
একটি সম্পত্তির দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের আবেদন প্রক্রিয়া বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম হয়। কেবলমাত্র কয়েকটি রাজ্যে অনলাইন আবেদনের সুবিধা রয়েছে। যদি কোনও রাজ্যে দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের জন্য অনলাইনে আবেদনের সুবিধা না-থাকে, তবে গ্রাহক একমাত্র সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকেই এই শংসাপত্র তুলতে পারবেন।
অনলাইনে দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের জন্য আবদন করতে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে:
- সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রেশনের সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের আবেদন’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।
- এর পর দায়বদ্ধতা শংসাপত্র আবেদন ফর্ম পেজ আসবে। ফর্মে চাওয়া সমস্ত তথ্য যথাযথ ভাবে পূরণ করে সেভ/আপডেট অপশনে ক্লিক করতে হবে।
- কত বছরের সময়সীমার জন্য শংসাপত্র চাওয়া হচ্ছে, সেই তথ্য প্রদান করে ‘ক্যালকুলেট ফি’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। হিসেবের পর ওয়েবসাইট যত টাকা দেখাবে, গ্রাহককে তত টাকা ফি হিসেবে জমা দিতে হবে।
- আবেদন ফি প্রদান করা হয়ে গেলে ‘Acknowledgement’ পেজ আসবে। ‘View Acknowledgement’ অপশনে ক্লিক করে আবেদনপত্রটি প্রিন্ট করে রাখতে হবে।
- ফর্মে উল্লিখিত সময়সীমার জন্য শংসাপত্র দেওয়া যাবে কি না, তা রাজ্য সরকারের ভূমি বিভাগের এক জন কর্মী দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের আবেদনে দেওয়া সমস্ত তথ্য যাচাই করে দেখবেন।
- যাচাই পর্ব শেষে আবেদনটি অনুমোদন যোগ্য হলে রেজিস্ট্রার অফিস গ্রাহককে দায়বদ্ধতা শংসাপত্রের একটি অনলাইন কপি প্রদান করবে।
দায়বদ্ধতা শংসাপত্র সাধারণত দুই ধরনের হয় -- ফর্ম ১৫ এবং ফর্ম ১৬। আবেদন ফর্মে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে যদি নির্দিষ্ট একটি সম্পত্তির কোনও আইনি বা অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতা থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে ফর্ম ১৫ প্রদান করা হয়। অন্য দিকে, উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে সম্পত্তিতে কোনও আইনি জটিলতা বা ‘লিয়েন’ চার্জ ধার্য করা না-থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে শুন্য দায়বদ্ধতা শংসাপত্র হিসেবে ফর্ম ১৬ দেওয়া হয়।