জারবেরা চাষের সাফল্যের পেছনে অন্যতম কারণ দু’টি বড় সেড হাউস। এই ২টি আধুনিক সেডে তাপমাত্রা, বাতাস চলাচল, আর্দ্রতা, আলো ও জলসেচ সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করা হয় বৈজ্ঞানিকভাবে। এখানে মোট পাঁচ রকমের জারবেরা উৎপাদিত হচ্ছে লাল, কমলা, গোলাপি, হলুদ আর সাদা। দূর থেকে দেখতে অনেকটা সূর্যমুখী ফুলের মত হলেও রঙের উজ্জ্বলতা ও ফুলের স্থায়িত্ব জারবেরাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে।খামারের মালিক জানান, এই গাছের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য গাছ থেকে নতুন করে চারা তৈরি হয় না।
advertisement
আরও পড়ুন: বিটেক কিংবা ফার্স্ট ক্লাস এমটেক হলেই আইআইটি-তে চাকরি, জানুন বিস্তারিত
তাই মানসম্পন্ন টিস্যুকালচার প্ল্যান্ট বিশেষ নার্সারি থেকে এনে রোপণ করতে হয়।একবার রোপণ করলে একটি জারবেরা গাছ চার থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত টানা ফুল দেয়, তাই দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যার উপরই নির্ভর করে পুরো চাষের সাফল্য।প্রতিদিন সকালে শ্রমিকরা সেডে ঢুকে প্রথমেই ফুল সংগ্রহ করেন। এরপর গাছগুলোকে পর্যাপ্ত জল দেওয়া, মাটিতে জৈবসার প্রয়োগ, ছত্রাক ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ এসব কাজ নিয়মিত করা হয়। ড্রিপ ইরিগেশন থাকায় জল অপচয় কমে, আর সেডের ভেতরে নিয়মিত বাতাস চলাচল ভেজাভাব কমিয়ে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বক্সি পরিবারের মতে, জারবেরা গাছ ‘যতটা যত্ন, ততটা ফল’। আর সেই নিয়ম মেনেই চলছে প্রতিটি ধাপ। জারবেরা ফুলের বাজার ভারতের সব জায়গাতেই স্থিতিশীল। বিয়ে, রিসেপশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্টেজ ডেকোরেশন, হোটেল রেস্তোরাঁ সব জায়গায় ব্যাপক ব্যবহার। বক্সি পরিবার বলছে, “আমাদের এই উদ্যোগ যদি আরও একজন যুবককে অনুপ্রাণিত করে, তবেই আমাদের পরিশ্রম সফল।”ভবিষ্যতে তারা সেড বাড়িয়ে আরও বেশি ফুল উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন। পাশাপাশি দূরের বড় মার্কেটেও ফুল পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন। সব মিলিয়ে নতুন হাটে জারবেরা ফুল আজ শুধু একটা চাষ নয়—একটা স্বপ্ন, একটা সম্ভাবনা, একটা নতুন পথের গল্প।
বর্তমানে বাজারে একটি জারবেরা ফুল পাঁচ থেকে ছয় টাকা দরে সহজেই বিক্রি হয়। ভাল মৌসুমে দাম আরও বাড়ে। ফুল সারাবছরই ফোটে, ফলে প্রতিদিনের আয়ও নিশ্চিন্ত। প্রতিটি গাছ থেকে নিয়মিত ফুল সংগ্রহ হওয়ায় খামারের আর্থিক প্রবাহ সবসময় সক্রিয় থাকে। এই চাষের লাভ দেখে স্থানীয় অনেক যুবক এখন এগিয়ে আসতে চাইছেন। কেউ কেউ খামারে এসে শিখছেন, কেউ আবার নিজের জমিতেও সেড বানানোর পরিকল্পনা করছেন।





