ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বীরভূমে। ওই দিন সিউড়িতে থাকা বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে অতর্কিতে হানা দেয় সিবিআই-এর দল। দীর্ঘ তিন ঘন্টার বেশি সেখানে তল্লাশি এবং ব্যাঙ্ক কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, ওই ব্যাঙ্কে ১৭৭ টি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট আছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে গরু পাচারের টাকা লেনদেন হত। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, অনুব্রত মণ্ডল প্রত্যক্ষভাবে এই ভুয়ো অ্যাকাউন্ট কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
advertisement
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে কম করে ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। তবে সঠিক অঙ্কটা এখনও বের করা সম্ভব হয়নি। ওই কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সহ পরিচালন পর্ষদের কর্তাদের কলকাতার নিজাম প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করে সিবিআই। এরপরই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নথি ব্যবহার করে ওই সমবায় ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলার মত গুরুতর অভিযোগ সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন: ১৭৭টি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট! কোটি কোটি টাকা ভুয়ো লেনদেন! কাণ্ড কোথায় ঘটল
সিউড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে যে ১৭৭ টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে, তার মধ্যে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য সুন্দরী বাসকি এবং মমতা মির্ধা-র নামেও অ্যাকাউন্ট আছে! তাঁরা সিউড়ি-২ ব্লকের হরিপুরের বাসিন্দা। যদিও ওই দুই মহিলার দাবি, তাঁদের নামে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে এমন কোনও অ্যাকাউন্ট আছে সেটা জানতেন না। তাঁরা গোটা বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সুন্দরী বাসকি এই প্রসঙ্গে জানান, শেষবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য তিনি তাঁর আধার কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড সহ নিজের ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য কোনও জায়গায় জমা দিয়েছিলেন। তাঁর আশঙ্কা, সেখান থেকেই যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে সিউড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে তাঁর নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক একাউন্ট খোলা হয়ে থাকতে পারে। ওই মহিলার এই দাবি রীতিমত শোরগোল ফেলে দিয়েছে বীরভূম জেলাজুড়ে।
যদিও সুন্দরী বাসকির এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন সিউড়ি-২ ব্লকের বিডিও শিলাদিত্য ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে সরকারি অফিসাররা থাকেন এবং সেখান থেকে কোনও নথি ফাঁস হওয়া সম্ভব নয়।
মাধব দাস