লাল মাটির দেশ বাঁকুড়া। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাজার হাজার গ্রাম। তাদেরই একটি হল রাজোগ্রাম। এই গ্রামের বিশেষ ঐতিহ্য তাঁত শিল্প। তাঁতের বিভিন্ন বস্ত্র এবং বিশেষ গামছা এক সময়ে প্রিয় ছিল বাংলার বিভিন্ন জায়গায়। এখনও সেই গামছা পাবেন রাজোগ্রামে গেলে। নরম, টেকসই আর আরামদায়ক। ত্বকের জন্য ভাল। খাঁটি সুতির এই হাতে বানানো গামছার উপকার অনেক।
advertisement
আরও পড়ুনঃ নেই মজিদ মাস্টার, ১২ বছর পর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসনে উড়ল লাল পতাকা
রাজোগ্রামের বৈষ্ণব পাড়া গেলে এখনও দেখা যাবে বিশেষ গামছা বোনার মেশিন। ব্যাবসায় মন্দা এলেও হাতে বানানো গামছা বোনার ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন আনন্দ কুন্ডু এবং আদিত্য কুন্ডু। শুধু পুরুষই নয় মহিলারাও বুনছেন তাঁত। তাঁতিরা (আনন্দ কুন্ডু) বলছেন, ভালবেসে যত্ন নিয়ে হাতে বানানো গামছা ব্যবহার করার মজাই আলাদা। কারখানায় বানানো গামছার জল ধারণ করার ক্ষমতা কম। অপরদিকে, হাতে বানানো রাজোগ্রামের তাঁতের গামছা এগিয়ে অনেক, গা মোছা যায় খুব সহজেই। আবার নরম বলে ত্বকের জন্যেও ভাল এই গামছা।
এক সময়ে নাম ডাক ছিল অনেক। বদলেছে সময়, বদলেছে রাজোগ্রামের তাঁত শিল্প। বছর দশেকের ওপর বন্ধ পরে আছে তাঁত সমবায় সমিতি। পরিত্যক্ত এই সমিতিতে এখনও নষ্ট হচ্ছে তাঁত বোনার সুতো। সরকারি ব্যাঙ্কের কাছে ধার ৬৮ লক্ষেরও বেশি। তবুও সব প্রতিকূলতাকে জয় করে তাঁত বুনবেন রাজোগ্রামের তাঁত শিল্পীরা (মহিলা তাঁত শিল্পী শ্যামলী দত্ত)। পূর্বপুরুষের হাত থেকে বয়ে আসছে তাঁতের গামছার ঐতিহ্য। তাই ব্যাবসায় মন্দা থাকলেও শোনা যাবে তাঁত বোনার আওয়াজ। স্বামী তাঁত বুনতে না পারলেও এগিয়ে আসবেন স্ত্রী। হাতে বানানো তাঁতের গামছার ঐতিহ্য বাঁচাতে বধ্য পরিকর বাঁকুড়া জেলার রাজোগ্রামের তাঁত শিল্পীরা।
Nilanjan Banerjee