রবিবার সন্ধেয় অন্যান্য দিনের মত কুনকি হাতি পৃথ্বীরাজকে নিয়ে জঙ্গলে টহল দিতে বেরিয়েছিলেন মাহুত রাজীব ওঁরাও। তাঁর বয়স বছর ৩০। কিন্তু জলদাপাড়া পূর্ব রেঞ্জের ব্যাঙডাকি বিটের মালঙ্গি তিন নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে হঠাৎই পৃথ্বীরাজকে ঘিরে ধরে একদল বুনো হাতি। তাকে বাগে পেয়ে আক্রমণ করে ওই বুনো হাতির দলটি। শুঁড়ের ঝাপটা, তেড়ে এসে ধাক্কা দেওয়া এসব চলতে থাকে। সামনের দুই পায়ে লোহার বেড়ি থাকায় অসহায়ের মতো মার খেতে বাধ্য হয় পৃথ্বীরাজ। এমনসময় দেহের ভারসাম্য হারিয়ে তার পিঠ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়েন মাহুত রাজীব ওঁরাও। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে পিষে মারে বুনো হাতির দলটি!
advertisement
আরও পড়ুন: ৬৩ বছর পর সমবায় সমিতিতে ভোট, বামেদের হারিয়ে বাজিমাত তৃণমূলের, দাগ কাটতে ব্যর্থ বিজেপি
মাহুতকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পৃথ্বীরাজ। সে একা পেরে ওঠেনি বুনো হাতিদের সঙ্গে। মাহুতকে মারার পর ওই বুনো হাতির দলটি চলে গেলে ছলছল চোখে আর্তনাদ করতে করতে ব্যাঙডাকির হস্তিশালায় ফিরে আসে কুনকি পৃথ্বীরাজ।
তাকে ওই অবস্থায় দেখেই সন্দেহ হয় কর্তব্যরত বনকর্মীদের। সঙ্গে সঙ্গে অন্য তিনটি কুনকি হাতিকে নিয়ে মাহুত রাজীব ওঁরাওয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন একদল বনকর্মী। শেষে মালঙ্গি তিন নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে উদ্ধার হয় মাহুত রাজীবের ক্ষতবিক্ষত দেহ।
ইতিপূর্বে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বেশ কিছু মাহুতকে ক্ষপে উঠে কুনকি হাতিরা মেরে ফেললেও রাজীব ওঁরাওয়ের পরিণতি একেবারেই নজিরবিহীন বলে দাবি করেছেন বনকর্তারা। এই ঘটনার পর বনের গভীরে কর্তব্যরত মাহুত ও বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই প্রসঙ্গে জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম বলেন, "খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সেইসঙ্গে নজিরবিহীনও বটে। সরকারি নিয়ম মেনে নিহত মাহুতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।"
অনন্যা দে