চন্দ্রবাবু নাইডু: জীবন, সাফল্য, কেরিয়ার এক নজরে!
পুরো নাম
নর চন্দ্রবাবু নাইডু।
জন্ম
২০ এপ্রিল, ১৯৫০। মাদ্রাজের নারাভারিপল্লে এলাকায়।
রাজনৈতিক দল
তেলেগু দেশম।
পরিবার
স্ত্রীর নাম নর ভুবনেশ্বরী। তাঁদের ১ পুত্র সন্তান রয়েছে।
পিতা – এন খরজুরা নাইডু।
মাতা – আমানাম্মা।
পড়াশোনা
গ্রামে কোনও স্কুল ছিল না। নবম শ্রেণী পর্যন্ত রোজ ১১ কিমি হেঁটে স্কুলে পড়তে যেতেন। উচ্চশিক্ষার জন্য যান তিরুপতিতে। সেখানেই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
চন্দ্রবাবু নাইডু সম্পর্কে
ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সে রায়ের লোক তাঁকে ডাকে ‘বাবু’ নামে। অন্ধ্রপ্রদেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার পর তিনি সে রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন। পাশাপাশি তিনি তেলেগু দেশম পার্টির সভাপতিও। ১৯৯৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটে হাত মেলান চন্দ্রবাবু। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও এনডিএ জোটের অংশ ছিল তাঁর দল। ১৯৯৫ সাল থেকে একটানা ২০০৪ পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন চন্দ্রবাবু। এর সঙ্গেই রেকর্ড গড়েন তিনি। চন্দ্রবাবুই সংযুক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব সামলানো মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, অন্ধ্রপ্রদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় থাকা বিরোধী দলের নেতাও তিনিই। মাত্র ২৮ বছর বয়সে অন্ধ্রপ্রদেশের সবচেয়ে তরুণ বিধায়ক এবং মন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর হাত ধরেই রাজ্যে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিতে বিপ্লব আসে। হায়দরাবাদকে দেশের অন্যতম আইটি হাব হিসেবে গড়ে তোলার পিছনেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
আকর্ষনীয় তথ্য
২০০৩ সালে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরনের কবলে পড়েন চন্দ্রবাবু। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন। কিন্তু কলারবোন এবং হেয়ারলাইনে মারাত্মক আঘাত পান। ২০১৬ সালেও তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠায় নকশালরা।
রাজনৈতিক জীবন
রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় যুব কংগ্রেসের ছাত্রনেতা হিসেবে। ১৯৮০ সালে অভিনেতা তথা টিডিপি-র প্রতিষ্ঠাতা এনটিআর-এর কন্যাকে বিয়ে করেন। ১৯৮৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে টিডিপি প্রার্থীর কাছেই হেরে যান। এরপর ওই বছরই যোগ দেন শ্বশুরের দলে। এক দশক নির্বিঘ্নেই কাটে। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা শ্বশুরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। রামা রাওকে সরিয়ে নিজে হন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এরপর টানা ২০০৪ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান তিনি। কিন্তু তারপর ক্ষমতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। ২০০৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয় টিডিপি এবং মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তবে সেবারও কুপ্পম কেন্দ্র থেকে জয়ী হন চন্দ্রবাবু। কিন্তু দল হারায় অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা নিযুক্ত হন নাইডু। টানা ২০১৪ পর্যন্ত থাকতে হয় বিরোধী শিবিরে। তিনিই ছিলেন অন্ধ্র বিধানসভার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিরোধী দলনেতা।বসেন বিরোধী আসনে। ২০১৪ সালে সংযুক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আলাদা হয়ে যায় তেলঙ্গানা। নবগঠিত অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন চন্দ্রবাবু।
পুরস্কার
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মিলেনিয়ামের আইটি ইন্ডিয়ান-সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার জিতেছেন চন্দ্রবাবু। নির্বাচিত হন বিজনেস পার্সন অফ দ্য ইয়ার হিসেবেও। নাইডুকে মার্কিন বিজনেস স্কুল সম্মানসূচক প্রফেসরশিপের প্রস্তাবও দিয়েছিল।
পরিচিতি: রাজনৈতিক মহলে বুদ্ধিমত্তা এবং সংস্কারের উদ্যোগের জন্যই চন্দ্রবাবু নাইডু পরিচিত। তাঁকে দক্ষ প্রশাসক এবং নীতি নির্ধারক হিসেবে মানা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ে তাঁকে দেখা হত কর্পোরেট সংস্থার প্রধানের মতো। সুশাসন এবং অবকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন বরাবর। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে জোর দেন তিনি। নাইডুর নেতৃত্বেই অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদকে নতুন বিনিয়োগের জন্য ভারতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্যে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করেছে।