*বহু মানুষের পছন্দের জায়গা পুরনো আমলের রাজবাড়ি জমিদার বাড়ি। তাই বর্তমানে পুরাতন আমলের রাজবাড়ি ও জমিদার বাড়ি ঘিরে ট্যুরিজম গড়ে উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এখনও পর্যন্ত যে দুটি রাজবাড়ি পর্যটকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে তা হল মহিষাদল রাজবাড়ি ও পঁচেট গড় রাজবাড়ি। তথ্য ও ছবি: সৈকত শী।
*পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকে অবস্থিত পঁচেট গড় রাজবাড়ি। দাস মহাপাত্র পরিবারের এই রাজবাড়ি গড়ে ওঠার পেছনে আছে চমকপ্রদ ইতিহাস। এই রাজবাড়ির পূর্বপুরুষ কালা মুরারিমোহন দাস মহাপাত্র ছিলেন বিখ্যাত সেতার বাদক। তাঁর সেতার বাজানোর খ্যাতি পৌঁছে যায় দিল্লীর মুঘল দরবারে। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব তাম্রলিপ্ত বন্দরে প্রশাসকের কাজ দেন। তার কাজে খুশি হয়ে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব পটাশপুর পরগনার জায়গীর দান করেন।
*স্থাপত্য শিল্পকলার দিক থেকে বিভিন্ন মন্দির ও বিভিন্ন স্থাপত্য বিভিন্ন স্থাপত্য ঘরানার নিদর্শন পাওয়া যায় পঁচেট গড়ে। বাংলার পঞ্চরত্ন স্থাপত্যকলা থেকে ওড়িশার রথ দেউল স্থাপত্য কলা এবং দক্ষিণ ভারতীয় স্থাপত্যকলার নিদর্শন পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্থাপত্য পাশ্চাত্য রীতির নিদর্শন পাওয়া যায়।
*পঁচেট গড় এক সময় ভারতীয় ভক্তি সঙ্গীত ও কীর্ত্তনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল। যদু ভট্ট (যদুনাথ ভট্টাচার্য) বাংলার অন্যতম 'বিষ্ণুপুর ঘরানা' থেকে বেরিয়ে আসা সবচেয়ে বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ। যদু ভট্ট পঞ্চেতগড়ের রাজবাড়ির প্রধান সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন কিছু সময়ের জন্য। তিনি পঞ্চেতগড় রাজপরিবারের কিছু সদস্যকে সঙ্গীতও শিখিয়েছিলেন।
*কলকাতা থেকে পঁচেটগড় রাজবাড়ির দূরত্ব মাত্র ১৯০ কিলোমিটার। সহজেই সড়কপথে পৌঁছনো যায় পঁচেট গড় রাজবাড়িতে। কলকাতা থেকে কোলাঘাট ও কাঁথি হয়ে পঁচেটগড় রাজবাড়িতে আসা যায়। বাস কিংবা ছোটগাড়ি করে পঁচেটগড় আসা যায়। পঁচেটগড়ে অবস্থিত অনেক মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে এগরার হাটখোলা মন্দির। ঘুরে আসতে পারেন কাছেপিঠেই মাদুর শিল্পের অন্যতম জায়গা পশ্চিম মেদিনীপুর সবং।